পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8" সাহিত্য-মীমাংসা উত্তরে বলেন : সত্য বটে, অস্থকর্তা নট অমুকার্য দুষ্যস্তাদি পাত্রপাত্ৰী হইতে ভিন্ন, এবং সে কখনও অমুকাৰ্যনিষ্ঠ মুখ্যরসের বাস্তব আশ্রয় হইতে পারে না। কিন্তু তাই বলিয়া সামাজিকগণের যে নট ও অমুকার্য নায়কের মধ্যে অভেদবোধ হইয়া থাকে, এবং তাহারা যে নটকেই বাস্তবিকভাবে মুখ্যরসের আধার বলিয়া মনে করিয়া থাকেন, ইহাও যে একেবারেই যুক্তিবজিত ও আকস্মিক, তাহাও নহে। নটকে র্তাহার। অমুকার্য নায়কের সহিত অভিন্ন বলিয়াই মনে করিয়া থাকেন, এবং এই অভেদবোধ আরোপমূলক । আমরা স্বন্দর শিশুমুখকে চন্দ্রের সহিত অভিন্ন বলিয়া মনে করি—মুখে চন্দ্রত্বের আরোপ করিয়া থাকি । ইহার মূলে আছে মুখ ও চন্দ্রের মধ্যে সৌন্দর্য বিষয়ে সাধর্ম্য। নাট্যাভিনয়ের ক্ষেত্রেও দুষ্যস্ত ও নটের মধ্যে যে অভেদবোধ, তাহারও মূলে আছে উভয়ের সাধর্ম্য। এই সাধর্ম্যই নটে দুৰ্যন্ত'-রূপ ধর্মের আরোপের (স্বপার-ইমপোজিশন ) মূলে। কি সেই সাধর্ম্য ? উত্তরে ভট্টলোল্লট বলেন ; ঐতিহাসিক দুৰ্য্যন্ত ব্যক্তির অস্থভাব, বেশভূষা প্রভৃতির সহিত অভিনয়কোবিদ নটের সেই সেই বিষয়ে সাম্য। ঐতিহাসিক দুৰ্য্যস্তের শকুন্তলাসন্দর্শনে যেমন যেমন শারীরচেষ্টাসমূহ দুষ্ট হইয়াছিল, মহারাজ দুৰ্য্যস্ত যেমনভাবে রাজেচিত বসনা ভরণে সজ্জিত হইয়া থাকিতেন, শকুন্তলা-বিরহে মহারাজ দুৰ্য্যন্তের যেরূপ বিরহদশা দেখা দিয়াছিল, অভিনয়নৈপুণ্যবশে এই সমস্ত অবস্থারই নিছক প্রতিফলনের দ্বারা নটকে দুৰ্য্যস্তাভিন্ন বলিয়া প্রতীতি জন্মে। এবং ঐতিহাসিক দুৰ্যস্তে যে রতিভাব মুখ্যভাবে আবিভূত হইয়াছিল, তাহাও সহৃদয় সামাজিকগণ কর্তৃক দুৰ্য্যন্তরূপী নটব্যক্তিতে ‘আরোপিত হইয়া থাকে। সেই জন্য ভট্টলোল্লট বলিয়াছেন, “তদ্রপতাকুসন্ধান” বা নট কর্তৃক অমুকার্য নায়কের রূপের ‘অনুসন্ধান' বা ‘অমুকৃতিই নটে ঐতিহাসিক নায়কনিষ্ঠ স্থায়িভাবের আরোপের মূলে । বস্তুত নটে কোনও রসের বাস্তব সত্তা নাই, উহা কেবল উপচরিত মাত্র, অতএব অমুখ্য । এই আরোপের ফলেই “ইনি দুৰ্য্যন্ত, ইনি শকুন্তলা বিষয়ক রতিমান”, সহৃদয়ের চিত্তে এইরূপ