পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও রসতত্ত্ব כף universal idea মাত্র । নায়কের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা। সুতরাং ঐতিহাসিক সর্বলোকবন্দনীয়া সীতাদেবী যদিও তাহার স্বকীয় বিশিষ্টতা লইয়া জনকতনয়ারূপে, মহারাজ দশরথের পুত্রবধুরূপে সহৃদয়ের শৃঙ্গারামুভূতির আলম্বন হইতে পারেন না বটে, তথাপি আদর্শনায়িকার শাশ্বত প্রতীকরূপে, কাস্তারূপে তিনি সমস্ত সহৃদয় সমাজেরই আলম্বনবিভাব হইতে পারেন, কোনও বাধাই আর থাকিতে পারে না । ‘তা এব চ পরিত্যক্তবিশেষ। রসহেতবঃ’ । এই স্থলে অনেকে প্রশ্ন করিয়া বসিবেন : সব ক্ষেত্রেই যদি কবিবর্ণিত নায়ুকনায়িকা আপনাদের স্বরূপগত বৈশিষ্ট্য ত্যাগ করিয়া কেবলমাত্র সর্বজনীনরপে সহৃদয়ের নিকট প্রতীত হইয়া থাকে, যদি সীতা এবং শকুন্তলা নিজ নিজ অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়া কেবলমাত্র কাস্তারূপে প্রেয়সীরূপে দর্শকচিত্তে আবিভূতি হন, তবে নায়িকা যে স্থলে নায়কের সোদর ভগিনী, সে স্থলে দর্শকের চিত্তে ঐৰূপ কাস্তাবুদ্ধির, প্রেয়সীবুদ্ধির উদয় হয় না কেন ? কেনই ব| সেই স্থলে তাদৃশ নায়িকাবিষয়ক শৃঙ্গারানুভূতি দর্শকের চিত্তে উপলব্ধ হয় না ? রসগঙ্গাধর-প্রণেতা পণ্ডিতরাজ জগন্নাথ ভটনায়কের বর্ণিত এই সাধারণীকৃতির মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে সমাধান নির্দেশ করিয়াছেন : কবিবাণত নায়কনায়িকা সহৃদয়ের রসামুভূতির প্রতি ‘বিভাব’রূপে কল্পিত হইতে পারে তখনই, যখন ঐরুপ বিভাব হইবার পক্ষে কোনও প্রতিবন্ধক বর্তমান থাকিবে না। ভগিনী’তে কাস্তাবুদ্ধি জন্মে না, সে সহৃদয়ের শৃঙ্গারাকুভূতির ‘আলম্বন-বিভাব হইতে পারে না, কেন না, লৌকিক দৃষ্টিতে ভগিনীর প্রতি প্রণয়মূলক আসক্তি গৰ্হণীয়। স্বতরাং এই লৌকিক সংস্কার অভিনয়দর্শনকালে সহৃদয় সামাজিকের চিত্তে জগন্ধক থাকে, এবং সেই বাধ-জ্ঞানই সহৃদয়ের শৃঙ্গারাকুভূতির প্রতিবন্ধক হইয়া দাড়ায়।’ করুণ, ১. এইগুলি কেবলমাত্র কতকগুলি দৈশিক ও সামাজিক নিষেধমাত্র—Psychologyতে বাহাঁদের বলা হয় social inhibitions ৷ যে দেশে বা সমাজে ভগিনীয় সহিত প্রণয়সম্বন্ধ রীতিবিগর্হিত নছে, তদেশীয় দর্শকের পক্ষে অভিনয়স্থলে ভগিনীও কাস্তারূপে তাহার শৃঙ্গারামুভূতির আলম্বনৰিভাৰ