পাতা:সাহিত্য-রত্নাবলী - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধুদের সাক্ষ্য। se কোথায়, আর মানুষের কর্ণ কোথায় ? মধ্যে কতটা ব্যবধান । আমরা চিরদিন শুনিয়া আসিতেছি যে, মানবের কর্ণে। পটহের ন্যায় একপ্রকার চৰ্ম্মময় আবরণ আছে, শব্দ আকাশ বা ইথারের তরঙ্গের দ্বারা নীত হইয়া সেই পাটহে আসিয়া আঘাত করে। সেই কম্পন স্নায়ুযোগে মস্তিস্কে নীত হয়, তাহাতেই শ্রুতিজ্ঞান জন্মে। আকাশ বা ইথারের এই তরঙ্গ এতদিন জ্ঞানিগণের অনুমানলব্ধ বিষয় মাত্র ছিল সকলেই বলিতেন, নিশ্চয় কোনও প্রকার তরঙ্গ আছে, নতুবা শব্দজাত কম্পন নীত হয় কি প্রকারে, কিন্তু কেহ সে তরঙ্গ পরীক্ষার দ্বারা দেখেন নাই। ডাক্তার জে, সি, বসু প্ৰভৃতি বর্তমান সময়ের বিজ্ঞানবিদগণ তাহা দেখিয়াছেন, পরীক্ষা দ্বারা ঐ তরঙ্গের নিঃসংশয় প্রমাণ প্ৰাপ্ত হইয়াছেন, তাড়িতের তরঙ্গ আর তঁহাদের শোনা কথা নয়, অনুমানলব্ধ জিনিশ নয়, দেখা জিনিস। তুমি আমি আকাশে বিস্তৃত পদার্থ সকলকে যেরূপ উজ্জ্বলভাৰে দেখিতেছি, তঁাহার তেমনি উজ্জ্বলতাবে উহা দেখিয়াছেন। আধ্যাত্মিক সত্যের সাক্ষাৎকারের আর এক প্রকার দৃষ্টান্ত প্ৰদৰ্শন করা যাইতে পারে। একবার একটা ইংলণ্ডীয় ধ্বনিসন্তানের একটা বিবরণ পাঠ করিয়াছিলাম, তাহা এই ৷ একবার একজন ধনিসন্তান পিতৃমাতৃহীন হয়। পিতৃমাতৃহীন হইয়া সে নিজের জ্যেষ্ঠতাতের হাতে পড়ে। জ্যেষ্ঠতাতটা কৃপণ-স্বভাব বিষয়ী লোক ; বিষয় চিন্তাতে র্তাহার হৃদয় জর্জরিত, সে হৃদয়ের কোমল ভাব সকল বিলুপ্ত প্ৰায়, সুতরাং সে বালক। তঁহার নিকট স্নেহ ও প্রীতির নিদর্শন কিছুই পাইত না। জেঠাই মাও ততোধিক। ঐ নারী নিজে যদিও পুত্রহীন ছিলেন এবং মনে করিলেই এই হতভাগ্য বালককে নিজ পুত্ররূপে গ্ৰহণ করিতে পারিতেন, কিন্তু তাহার স্বার্থপর ও নিৰ্ম্মম অন্তরে সে প্রীতি ছিল না, তিনি তিক্ত ও কঠোর ব্যবহারে ঐ বালকের হৃদয়কে চিয়-বিষা করিয়া দিয়াছিলেন।