পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলেন্দ্রনাথ ও বাংলা-সাহিত্য २ * বন্দর হইতে সিংহলে, চীনে এবং অন্যান্ত নানা দূরদেশে পণ্য ও যাত্রী লষ্টয়া নিত্য যে সকল বৃহৎ অর্ণবযান যাতায়াত করিত, তাহাদের নাবিকেরা এই কোণার্কমন্দিরের মধুর ঘণ্টাধ্বনি শুনিয়া বহুদিন সন্ধ্যাকালে দূর হইতে দেবতাকে সসন্ত্ৰম অভিবাদন জানাইত ; এবং দেবতার যশঘোষণায় তরণীর সুবিস্তৃত চীনাংশুককেতু উডউীয়মান হইত। মন্দি:রর বহিঃপ্রাঙ্গণে, দ্বারের সম্মুখে, সিদ্ধগন্ধৰ্ব্ব-সেবিত প্রাচীন কল্পবটমূলে শত সহস্ৰ যাত্রী—কত দুরারোগ্য রোগ হইতে মুক্তিলাভ করিতে আসিয়াছে। একবার যদি স্বৰ্য্যদেবের অনুগ্রহ হয়, একবার যদি মহাদু্যতি আপন কনক কিরণে সমস্ত জালাযন্ত্রণ হরণ করিয়া লয়েন ! ... পরিত্যক্ত পাষাণকূপের নির্জন নিকেতনে নিশাচর বাদুড় বাসা বাধিয়াছে, হিমশিলাখণ্ডোপরি বিষধর ফণিনী কুগুলী পাকাইয়া নিঃশঙ্ক বিশ্রামস্কথে লীন হইয়া আছে ; সম্মুখের ঝিল্লিমুখরিত প্রান্তরদেশ দিয়া গ্রাম্য পথিকজন যখন কদাচিৎ দূর তীর্থ উদ্দেশে যাত্রা করে, একবার এই জীর্ণ দেবালয়ের সম্মুখে দাড়াইয়া চতুর্দিকে চাহিয়। দেখে এবং বিলম্ব না করিয়া আসন্ন স্বৰ্য্যাস্তের পূৰ্ব্বেষ্ট দ্রুতপদে আবার পথ চলিতে থাকে —কণারক এখন শুধু স্বপ্নের মত, মায়ার মত ; যেন কোন প্রাচীন উপকথার বিস্তুতপ্রায় উপসংহার শৈবাল-শয্যায় এখানে নিঃশব্দে অবসিত হইতেছে—এবং অস্তগামী স্বর্ষ্যের শেষ রশ্মিরেখায় ক্ষীণপাণ্ডু মৃত্যুর মুখে রক্তিম জাভা পড়িয়া সমস্তটা একটা চিতাদৃষ্ঠের মত বোধ হয় ।”—'সাধনা’, ভাদ্র ১৩০ • ।