পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের মাসিক কাৰ্য্যবিবরণী ।। ২৮৭৩/০ শ্ৰেষ্ঠ ? সুরেন্দ্রনাথের ভাষা, ভাব উভয়ই উচ্চ অঙ্গের, কিন্তু বেহারীলালের কবিত্ব এখনকার স্বভাবানুরূপ। এখনকার কবিতায় যে রীতি আরম্ভ হইয়াছে, বিহারী লালই তাহার প্রথম। বিহারীলালকে যিনিই কেন না। “দুঃখের কবি” বলুন, তাহার সারদামঙ্গল অমৃতময় কাব্য। তাহার সারদায় স্বর্গের ভাব পরিস্ফুট। তিনি কবিতায় আনন্দ ভালবাসা ছড়াইতে চাহিয়াছেন, তাহাতে সফলও হইয়াছেন। সত্যবটে বিহারীলালের কবিতায় ভাষার ও অলঙ্কারের তেমন জমাট নাই, কিন্তু ভাবের গাম্ভীৰ্য্যে তাহার স্থান বড় উচ্চ। আমি বিহারীলালকে পাগল কবি বলিতে পারি। তিনি নিজের ভাবটুকুতে ভোর, ভাষায় বা অহঙ্কারের নিগড়ে সে জন্য তিনি আবদ্ধ হইতে চাহেন না । সুরেন্দ্রনাথের ভাব ভাষা অলঙ্কার তিনরই সামঞ্জস্য আছে। সুরেন্দ্রনাথও বিহারীলালের ন্যায় নিজের সাধনায় সিদ্ধ হইয়া গিয়াছেন, তবে র্তাহার ভাষা বিহারীলালের ন্যায় সামান্য জনগ্ৰাহিণী নহে, তাহার কাব্যে যেমন ভাবের গভীরতা, ভাষারও তেমনিই গাম্ভীৰ্য্য আছে। বিহারীলালের ভাষাগুণে বিহারীলাল সৰ্ব্বজনের সুখগ্ৰাহ, আর সুরেন্দ্রনাথের পাঠকশ্রেণী সাধারণের অপেক্ষা একটু উচ্চ স্তরের। দোষ গুণ উভয় কবিরই আছে, সহৃদয় পাঠকেরা তাহ দেখিবেন। এই উভয় কবির কাব্যসমালোচনা করিয়া স্বতন্ত্র দুই প্ৰবন্ধ হওয়া উচিত। তৎপরে সভাপভি মহাশয় বলিলেন, রাত্রি অধিক হইয়াছে, আর এখন অধিক কথা বলার অবসর নাই, আর অন্ধ্যকারী প্ৰবন্ধ বিষয়ে আমার কোন কথা বলা একান্ত অনধিকার। তবে একটা কথা বলিতে পারি, আমরা যাহা শুনিলাম, তাহাতে বুঝিলাম উভয় কবিকে লইয়াই আমরা গৌরব করিতে পারি, উভয়ের কাব্য হইতে প্ৰবন্ধ-পাঠক যে সকল স্থল উদ্ধত করিয়াছেন, তাহাতে বুঝা যায় এই উভয় কবির রীতিমত আদর হওয়া উচিত ছিল। আমাদের মধ্যে আজকালই বা বলি কেন, বহুকাল পূর্ব হইতেই কাব্যামোদীর সংখ্যাই বেশী অথচ এমন দুইজন কবির আদর আমাদের দেশে হয় নাই, এ জন্য আমরা আমাদিগকে অপরাধী বলিয়া মনে করি। পরিষদে ইহাদের সম্বন্ধে আলোচনা হইলে, আমরা সে অপরাধ হইতে মুক্ত হইতে পারি, অপরের কথায় প্রয়োজন কি, আমি আজ সভাপতি, অথচ আমিই কবি সুরেন্দ্ৰনাথ সম্বন্ধে কিছুই জানি না বা তঁহার কাব্য পড়ি নাই, বিহারীলালের কবিতা বরং পড়িয়াছি। যাহা হউক, উভয়ের একটা সাদৃশ্য আছে—উভয়েই নারী-পূজক। নারীপূজা অর্থে স্ত্রী-উপাসনা নয়। সুরেন্দ্রনাথ যে ভাবে নারী-জাতিকে পূজা করিতে চাহিয়াছেন, র্তাহার ন্যায় মাতা ভগ্নী কন্যাদির ধারা শুধিবার জন্য কে নারীপূজা করিতে পারেন ? যাহা হউক, উভয় কবি কিরূপে সেই সাধ্যবস্তুর সাধনা করিয়া গিয়াছেন, তাহা আমি সকলকেই পড়িতে অনুরোধ করি, বিশেষতঃ র্যাহারা কাব্যামোদী, তাহারা এরূপ দুইটি কবিকে কেন উপেক্ষা করিতেছেন ? , , , অতঃপর বিবিধ বিষয়ের মধ্যে কবিবর হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রেরিত পত্রোত্তর %ਲ ਭੋਗ |