পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । ه/O}lo\ শ্ৰীযুক্ত ধৰ্ম্মপাল ইংরাজীতে বলেন, নিৰ্ব্বাণ বৌদ্ধ-দর্শনের ও মনস্তত্বের শীর্ষস্থানে অবস্থিত। বুদ্ধ পুনঃ পুনঃ বিনাশবাদের নিন্দা করিয়া গিয়াছেন। নিৰ্বাণবাদ বিনাশবাদী নহে। নিৰ্বাণ যোগ লভ্য, অব্যক্ত। যখন মানবের মানসিক উন্নতি হয়, তখনই তিনি নির্বাণের অর্থ বুঝিতে পারেন। রাগাকার মোহকার ও দোষক্ষয় বিনাশ নহে। রিপু, শান্ত করিয়া যোগাভ্যাস করা কৰ্ত্তব্য । ইহা আশার বাণী, অনন্ত শান্তির পুর্বাভাষ্য। নানা লোক বৌদ্ধধৰ্ম্মকে নানা ভাবে দেখিয়াছেন। কেহ ইহাতে আস্তিক্যবাদ, কেহ নাস্তিক্যবাদ ইত্যাদি দেখিয়াছেন । জগৎ সন্ত পরিবর্তনশীল। যাহা পরিবর্তনশীল, তাহাকে কি আমি বা আমার রাখিতে পারে ? নিত্য “আমিত্ব”বাদে আকৃষ্ট হইও না । ইহাই Theory of আত্মন। উপাধ্যায় ব্ৰহ্মবান্ধব বলেন, বৌদ্ধধৰ্ম্মে নিত্যবস্তুর অভাব। শঙ্কর বলেন, নিত্যবস্তুর অভাবে জগৎ থাকিতে পারে না। বৌদ্ধ ধৰ্ম্মে শূন্যবাদ অর্থাৎ প্রবাহের কথা। শঙ্কর এই নিত্যবস্তুর অভাবেরই প্ৰতিবাদ করিয়াছিলেন। তাহাই তাহার বৌদ্ধমত-খণ্ডনের ভিত্তি। বৌদ্ধধৰ্ম্ম এদেশের ধৰ্ম্মে মিলিয়া গিয়াছে সত্য। তাহাতে যথেষ্ট উৎকৃষ্ট বস্তু আছে; কিন্তু বৌদ্ধ মত এদেশ হইতে বিতাড়িত। এই নিত্যবস্তুর অভাবের প্রতিবাদই শঙ্করের ব্ৰহ্মাস্ত্ৰ । বুদ্ধ মহাপুরুষ সন্দেহ নাই। বৌদ্ধ মায়া ও বেদান্ত মায়া এক নহে। নিত্যবস্তুর স্থাপনই শঙ্করের জীবন ব্ৰত। তঁহারই চেষ্টায় বৌদ্ধ নাস্তিকতার দূর হয়। শ্ৰীযুক্ত বাবু চারুচন্দ্ৰ বসু বলেন, সহসা এরূপ গুরুতর বিষয়ের সম্যক আলোচনা সম্ভব নহে। লেখক মহাশয় আমাদের বিশেষ ধন্যবাদের পাত্র । তিনি এত বিস্তৃত বিষয় না। লাইলে আলোচনার সুবিধা হইত। পালিতে লিখিত ত্রিপিটকের দশমাংশও অনুদিত হয় নাই ; সুতরাং পালি না জানিলে, বৌদ্ধ মত জানিবার সুবিধা হয় না। অভিধৰ্ম্ম-পিটকে বৌদ্ধধৰ্ম্মের বিষয় বিশেষরূপে অবগত হওয়া যায়। বৌদ্ধগণ ঈশ্বর, আত্মা ও বেদ এই তিন অঙ্গীকার করেন। বুদ্ধের প্রথম ছয় বৎসরের আলোচনার ফল প্রতীত্যসমূৎপাদ। দুঃখ অবিদ্যা হইতে উৎপন্ন। বৌদ্ধমতে নিত্যবস্তু নিৰ্বাণ । পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বলেন, বৌদ্ধধৰ্ম্ম এক হিসাবে মৃত হস্তীর সহিত উপমেয়। এসিয়ার মানচিত্ৰ তাহার অবয়ব। আমরা অন্ধের মত চারিদিকে হাত বাড়াইয়া বেড়াই। যিনি যে অংশ স্পর্শ করেন, তিনি সেই অংশকেই বৌদ্ধধৰ্ম্ম বলিয়া মনে করেন। বক্তা মহাশয় বোধ হয় মন্তক স্পর্শ করিয়াছেন। যেখানে সকলেই অন্ধ, সেখানে একজনের অসম্পূর্ণতার কথা বলা সঙ্গত নহে। কত স্থানে কত ভাবে বৌদ্ধধৰ্ম্ম চলিত, তাহ দেখা, জানা ও বুঝা সহজ নহে। কাজেই প্ৰবন্ধের অসম্পূর্ণতার আলোচনা করা অন্যায়। কেহ কেহ বলেন, বৌদ্ধধৰ্ম্ম শঙ্কর ভারতবর্ষ হইতে তাড়াইয়াছিলেন। তঁহার একথা বলেন কেন ? শঙ্করের পর (দশম শতাব্দী পৰ্যন্ত) বৌদ্ধগ্রন্থের টীকা রচিত হইতে দেখা যায়। চতুর্দশ শতাব্দী পৰ্যন্ত বঙ্গদেশে বৌদ্ধধৰ্ম্ম লিখিত হয়। Cambridge-Collection ও নেপাল দরবার পুস্তকগার উভয় স্থানেই তাহার নিদর্শন আছে। বরং বৌদ্ধধৰ্ম্ম আন্ডােনর কথা মুসলমানদিগের সম্বন্ধে