পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (একাদশ ভাগ).pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন ১৩১১ ] , পয়ার ছন্দের উৎপত্তি । St. DD DBBD BD D BDBD DDBDD S DBBDBDS DuBSuSDB BB DBBDBS বাঙ্গালা ভাষায় পয়ার ছন্দ নাম ধারণ করিয়াছে, তাহা আমরা স্বীকার করিতে পারি না ; ! কেননা অনুষ্ঠপের সহিত পয়ায়ের না। অক্ষরগত না মাত্রাগত, কোন সোসাদৃশ্যই দেখিতে পাওয়া যায় না। পক্ষান্তরে সংস্কৃত ছন্দসমূহের প্রকৃতির আলোচনা করিলে আমরা দেখিতে পাই, উহার এক হিসাবে অমিত্ৰাক্ষর আর এক হিসাবে মিত্ৰাক্ষর। অমিত্ৰাক্ষর ছন্দ বলিলেই যেন মিল্টনী আদর্শে মাইকেলী ছন্দ মনে পড়ে ; বস্তুতঃ তাহা নহে। উক্ত সংস্কৃত ছন্দসমূহ মিত্ৰাক্ষরের শৃঙ্খলা ও যতি হইতে বিভিন্ন এবং উহাদের প্রতিচরণের শেষ শব্দ বা অক্ষরেরও পরস্পর মিল নাই। পক্ষান্তরে বাঙ্গালা পয়ারছন্দে মিত্ৰাক্ষরের শৃঙ্খলা ও যাতি এবং উহার প্ৰতিচরণের শেষ শব্দ বা অক্ষরের পরস্পর মিল বৰ্ত্তমান । সংস্কৃত ও বাঙ্গালায় প্ৰভেদ এই। ংস্কৃত ছন্দসমূহের মধ্যে “চতুৰ্দশাক্ষরাবৃত্তি” নামে একটি ছন্দ দৃষ্ট হয়। অনেকে এই “চতুৰ্দশাক্ষর” নাম শুনিয়াই ইহাকে বাঙ্গালী চতুৰ্দশাক্ষর পরিমিত পয়ারছন্দের উৎপত্তিস্থান বলিয়া স্থির করিতে পারেন, কিন্তু ইহার যতি প্ৰভৃতির নানা নিয়ম দেখিলে ইহাকে বাঙ্গালা পয়ারের উৎপত্তিস্থান বলা যায় না। এই চতুর্দশাক্ষরাবৃত্তি আবার অসদ্বাধী, বসন্ততিলক, অপরাজিতা, প্রহরণ, কলিকা, বাসন্তী, লোলো ও নান্দীমুখী প্ৰভৃতি পর্যায়ে বিভক্ত ; অনেকে ইহাদের মধ্যে “বসন্ততিলক” ছন্দকে বাঙ্গালা পয়ারছন্দের সহিত সাদৃশ্য দেখান। কিন্তু ইহারও যতি ৫৷৯, ৮৯ এবং ৭.৭ প্রভৃতি নিয়মে গ্রথিত। বাঙ্গালা পয়ারের যতি-সংস্থাপনের নিয়মের সহিত সর্বাংশেই বিভিন্ন। হইতে পারে কালক্রমে এই বসন্ততিলক ছন্দ বাঙ্গালা পয়ারছন্দে পরিণত হইয়াছে। ইহার সহিত পয়ারের অক্ষর বা মাত্ৰাগত যে প্ৰভেদ তাহা কালক্রমে বিদূরিত হইয়া হয় তা বাঙ্গালা পয়ারছন্দে পরিণত হইয়াছে; কিন্তু এ সম্বন্ধে বিশেষ প্ৰমাণ প্ৰয়োগ দ্বারা বুঝান অসম্ভব । এক্ষণে পয়ার ছন্দের উৎপত্তি সম্বন্ধে আপাততঃ আর অধিক আলোচনা না করিয়া ইহার বুৎপত্তি সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ আলোচনা করা যাইতেছে ; কেননা পয়ার শব্দের বুৎপত্তির নির্ণয় হইলে ইহার ছন্দেরও সন্ধান হইতে পারে। কিন্তু “পয়ারশব্দ” যখন সংস্কৃতমূলক নহে, তখন প্রচলিত ব্যাকরণ অথবা অভিধানে ইহার বুৎপত্তি সম্বন্ধে কোন উল্লেখই छूछे হয় না। প্রচলিত অভিধান-সঙ্কলনকৰ্ত্তারা সংস্কৃত নিদানে ইহার বুৎপত্তির কোন বিধান না পাইয়া অবশেষে “অসারে জলসার” ব্যবস্থার ন্যায়। ইহাকে “দেশজ” শ্ৰেণীভুক্ত • কেরিয়া ক্ষান্ত হইয়াছেন। “দেশজ” শব্দের অর্থ কি ? ইহার কি কোন মূল নাই ? বন্ধুবর আবদুল করিম মহাশয় পূর্বোক্ত পত্রে লিখিয়াছেন “প্রচলিত অভিধানাদিতে”পয়ার যে “দেশজ” বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে, তাহা দেখিয়াছি। কৰ্ত্তাদিগকে জিজ্ঞাসা করিতে ইচ্ছা হয় যে, উহ। কোন “দেশজ” ?-স্বর্গের না মর্ত্যের? আমার মতে ঐক্কাপ লিখিয়া কোষকারের কেবল গোঁজমিল করিয়া গিয়াছেন মাত্র। “দেশজ” শব্দের মূল নাই, এ ধারণা ঠিক নহে”। “দেশজ” শব্দের অর্থ দেশ প্রচলিত বা দেশজাত ; এই অর্থে পয়ার শব্দকে “দেশজ” বুলিতে আবদুল করিম। মহাশয় আপত্তি করিয়াছেন ।