পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (চতুর্থ ভাগ).pdf/৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩০৪ ] মহারাণী বিক্টোরিয়ার রাজত্বে বাঙ্গালা সাহিত্য । নিরন্তর প্রকৃতির মলিনভাবেরই পরিচয় দিতেছে। কিন্তু এই মালিন্যের মধ্যে এমন । উৎসাহ, এমন সজীবতা, এমন অধ্যবসায়সহকৃত প্ৰসন্নতা রহিয়াছে যে, তাহার আলীম শক্তিতে বারিধিবেষ্টিত একটী ক্ষুদ্রদ্বীপ পৃথিবীর ললাটমণিস্বরূপ হইয়া রহিয়াছে नभांजচক্রের এইরূপ আবৰ্ত্তনে সাহিত্যের পূর্বতন অবস্থারও পরিবর্তন ঘটিয়াছে। সমাজ ষে ভাবে আকৃষ্ট হয়, সাহিত্য সাধারণতঃ তদনুরূপ ভাবেই সংগঠিত হইয়া থাকে। সময়ে সময়ে সাহিত্যও সমাজসংগঠনে সহায়তা করে । সমাজকে সৎপথে পরিচালিত করিবার জন্য প্ৰতিভাশালী লেখক উচ্চ অঙ্গের গ্ৰন্থ প্ৰণয়ন করেন। ইহাতে সমাজের যথোচিত উপকায় হয় । কিন্তু সাধারণ সাহিত্য প্রধানতঃ সামাজিক রুচিশ্রোতেই পরিচালিত হইয়া থাকে । ইংলণ্ড যখন বিলাসভারে অবনত ছিল, উৎকট ভোগাভিলাষে ইংরেজ যখন সুনীতির বন্ধন শিথিল করিয়া ফেলিতেছিল, তখন ইংলেণ্ডে প্ৰধানতঃ বিষয়-বাসনার উদ্দীপক কবিতার প্রাধান্য ছিল। আবার ইংলণ্ড যখন আপনার প্রাধান্য ও স্বাধীনতার রক্ষার জন্তু ভয়াবহ সংগ্রামে ব্যাপৃত হইয়াছিল, গভীর উচ্ছাস ও আবেগের খরতর তরঙ্গে লোকের হৃদয় যখন আন্দোলিত হইয়া উঠিয়াছিল, তখনও কবিতার প্রাধান্য ইংলণ্ডের সাহিত্য হইতে আন্তহিত হয় নাই। উদ্দীপনাময়ী কবিতা ও উৎসাহোদ্দীপক সঙ্গীত সে সময়ে সাহিত্যের প্রধান অঙ্গ ছিল। লোকের হৃদয় কৰ্ম্ম প্রবণ ও ধৰ্ম্মানুরক্ত করিবার জন্য কবি রসময়ী কবিতা লিখিতেন। সমাজ এই কবিতাস্রোতে ভাসমান হইয়া যেরূপ আনন্দ উপভোগ করিত, সেইরূপ আপনার লক্ষ্যনির্ণয়েও সমর্থ হইয়া উঠিত। এখন এই সময় পরিবর্তিত হইয়াছে। কৰ্ম্মক্ষেত্রে এখন লোকে অপরিসীম উৎসাহ ও অধ্যবসায়ের পরিচয় দিতেছে। ইংলণ্ডের সাহিত্যে এখন কবিতার প্রাধান্য অন্তহিত ও পদ্যের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। এলিজাবেথের ইংলণ্ড যেমন আনের ইংলণ্ডের সদৃশ নহে, সেইরূপ আনের ইংলণ্ডকে বিকটোরিয়ার ইংলণ্ডের সহিত এক শ্রেণীতে নিবেশিত করাও সঙ্গত নহে। পরিবর্তনের যুগে বিকটোরিয়ার ইংলণ্ডে লোকের মানসিক ভাব যে বিষয়ের দিকে গিয়াছে, গদ্যপ্ৰধান সাহিত্যেও সাধারণতঃ সেই বিষয়ের আলোচনা হইতেছে। সাহিত্যসেবকগণ এখন কৰ্ম্মনিষ্ঠ সমাজের তৃপ্তিসাধন জন্য অর্থনীতি, দর্শন, বিজ্ঞান ও ইতিহাস বিষয়ক গ্ৰন্থ লিখিতেছেন। বিষয়ী লোকে ক্ষণ কালের জন্য সংসারের কোলাহল হইতে দূরে থাকিয়া নির্জনে আমোদ লাভের জন্য লালায়িত হয়। সমাজ যখন এইরূপ লালসাম্রোতে ভাসমান হইতে থাকে, তখনই বিবিধ উপন্যাসের স্মৃষ্টি হয়। উপস্থিত সময়ে ইংলণ্ডের এই অবস্থা ঘটিয়াছে। ইংলণ্ডের সাহিত্যও উপন্যাস প্ৰধান হইয়া উঠিয়াছে। • পক্ষান্তরে র্যাহারা সৰ্ব্বদা বিষয়কৰ্ম্মে ব্যাপৃত থাকেন, সংসারক্ষেত্রে নিরন্তর আপনাদের কৰ্ম্মশীলতা প্ৰদৰ্শন করেন, এবং কোন দিকে দৃকপাত না করিয়া, যে কোন রূপে হউক, আপনাদের সাধনায় সিদ্ধি লাভ করিয়া থাকেন, তাহারা বৃহৎ বৃহৎ গ্ৰন্থপাঠ করিতে পারেন। না। বৈষয়িক ব্যাপারের আধিক্যে তঁহাদের সময় সংক্ষিপ্ত হয়। সুতরাং তাহদোয় পক্ষে: |