পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (চতুর্থ ভাগ).pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नम ०७०8 } নরোত্তম ঠাকুর । । ৩৬ ক্ৰমে পরিচয় হইল, দুই তিন দিন পরে রাজকুমার সাধুদর্শনে বহির্গত হইলেন। একে একে সেই দেবনিষ্ঠ ভক্তগণকে দেখিয়া নরোত্তম বিস্মিত হইতে লাগিলেন। ক্রমে তিনি লোকনাথ গোস্বামীকে দেখিলেন। তঁহাকে দেখিবা মাত্ৰই নরোত্তমের মনে অপুৰ্ব্ব ভাবের উদয় হইল, মনে মনে তিনি তঁাহার চরণে চিরতরে আত্মসমৰ্পন করিলেন । কিন্তু যখন শুনিলেন যে, লোকনাথ গোস্বামীর সঙ্কল্প যে তিনি শিষ্য করিবেন না, তখন তঁাহার হৃদয়ে শত শত শেল আঘাত করিল। যদি কোন যুবতী, কোন যুবাকে আত্মসমর্পণ করিয়া জানিতে পারে যে, যুবক বিবাহ করিবে না, তখন সে যেমন কাতর হয় ও পরে সতীত্বরক্ষার জন্য দৃঢ় প্ৰতিজ্ঞা করে, নরোত্তমও তখন তদ্রুপ দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞায় বদ্ধ হইলেন। তিনি গোপনে লোকনাথ গোস্বামীর সেবা আরম্ভ করিলেন । নরোত্তমের হৃদয় কিরূপ দৈন্য ভাবাক্রোন্ত ছিল, তাহার সেবার কথা ভাবিলেই তাহা বোধ হয় । e'প্ৰমবিলাসে নরোত্তমের এই গোপনীয় সেবার কথা এইরূপে লিখিত আছে,- “অরি এক সাধন যেই করে নরোত্তম। রাত্ৰিশেষে সেই সেবা করিল নিয়ম ৷ যেই স্থানে গোসাঞি যায়েন বহির্দেশ । সেই স্থানে যাই করে সংস্কার বিশেষ ৷” এ মানীর কাৰ্য্য ব্যতীত নরোত্তম আর একটি কাৰ্য্য করিতে লাগিলেন। যথা অনুরাগবল্লী গ্রন্থে-“মৃত্তিক শৌচের তরে সুন্দর মাটি আনে। ছড়া ঝাটা জল আনে বিবিধ বিধানে ৷” ( অনুরাগবল্লী ) লোকনাথ ব্যাকুল হইলেন। কে এমন করে ? উদ্দেশ্য কি ? যা হোক, একদিন তিনি রাত্ৰি থাকিতেই বহির্দেশে গেলেন ও নরোত্তমের কাণ্ড দেখিলেন । নরোত্তমকে তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন, নরোত্তম পূৰ্ব্বাপর সকল কথা অকপটে তঁহার কাছে কহিলেন । শুনিয়া গোস্বামী বলিলেন “যে প্ৰেম লাগিয়া সবে করেন ভজন । তোমার অন্তরে সেই বুঝিল কারণ ৷ প্ৰয়োজন আছে কিবা গুরু করিবারে ?” ( প্ৰেমবিলাস । ) আরও এক বৎসর গেল, আরও এক বৎসর কাল নরোত্তম গুরুর সেবা করিলেন । এক বৎসর পরে লোকনাথ নরোত্তমকে আশা দিলেন । নরোত্তমের মনস্কামনা সিদ্ধি হইল । শ্রাবণের পূর্ণিমাতে নরোত্তম দীক্ষিত হইলেন । নরোত্তম শ্ৰীজীবের নিকট সমস্ত গোস্বামী গ্ৰন্থ অধ্যয়ন করেন। অদ্ভুত প্ৰতিভায়, অল্প কালেই তিনি অদ্বিতীয় পণ্ডিত হইয়া উঠিলেন। শ্ৰীজীব গোস্বামী তাহাকে উপযুক্ত দেখিয়া এই সময়েই “ঠাকুর মহাশয়” উপাধি দান করেন। I ά