পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (চতুর্থ ভাগ).pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>So8 } রামাই পণ্ডিতের ধৰ্ম্মমঙ্গল Vet i লেখা, না হয়। ইদানীন্তন লোকের লেখা, সুতরাং তাঁহাতে ধৰ্ম্মের সঙ্গে সঙ্গে অন্য দেবতাও আছেন, কিন্তু রামাই পণ্ডিত খাট ধৰ্ম্মপণ্ডিত ধৰ্ম্ম ছাড়া, তিনি আর কিছু জানেন না, তাই তঁহার ধৰ্ম্মায়ণে অন্য দেব দেবীর বন্দনা নাই। তঁহার পদ্ধতির এক অংশ পুরাণের ন্যায় স্থষ্টির ব্যাপারে পূর্ণ, তাহার আরম্ভ এই-- ‘শ্ৰীশ্ৰীধৰ্ম্মায় নাম । শূন্যপুরাণ লিখ্যতে নাই রেক নাই রূপ নাই ছিল বর্ণ চিকু’। রবি শশী নাই ছিল নাই রাত্ৰি দিন ॥ নাই ছিল জল স্থল নাই ছিল আকাশ । মেরু মন্দার না ছিল না। কৈলাস ৷ দেবতা দোহারা নাই পুজিবার দেহ। মহাশূন্য মধ্যে প্রভুর আর আছে কেহ ॥ ঋষি যে তপস্বী নাই নাহিক ব্ৰাহ্মণ । পৰ্ব্বত পাহাড় নাই নাহিক স্থাবর জঙ্গম ৷ পুণ্য স্থল নাই ছিল নাই গঙ্গা জল। সাগর সঙ্গম নাই দেবতা সকল৷ নাই সৃষ্টি ছিল আর নাই সুর নর। ব্ৰহ্মা বিষ্ণু না ছিল না ছিল আধার ॥ বার ব্ৰত না ছিল ঋষি যে তপসী । তীর্থস্থল নাহি ছিল গায় বারাণসী ৷ প্ৰয়াগ মাধব নাই কি করি বিচার। স্বৰ্গ মৰ্ত্ত্য নাই ছিল সব ধুন্ধুকার ॥ দশদিকপাল নাই মেঘ তারাগণ । আয়ু মৃত্যু নাই ছিল যমের তাড়ন ॥ চারি বেদ নাই ছিল শাস্ত্রের বিচার। গুপ্ত বেদ করিলেন প্ৰভু করতার ॥ শ্ৰীধৰ্ম্মীচরণারবিন্দ করিয়া প্ৰণতি। শ্ৰীযুত রামাই কয় শুনরে ভারতী ৷” তবেই তো দেখা যাইতেছে, ধৰ্ম্মঠাকুর যজ্ঞ নিন্দ করেন। এই কথা বুলিয়াছিল বলিয়া মার্কণ্ডেয় মুনির কুষ্ঠ হইল। ধৰ্ম্মঠাকুরের নাম আদ্য, তিনি শূন্য হইতে স্বষ্টি করেন। শূন্য হইতে সৃষ্টি তো আর কোন ঠাকুর করেন নাই। শূন্তও তো হিন্দুদিগের মত নয়। মনু বলিয়াছেন ;- “আসীদিদং তমোভুতম প্রজ্ঞাতমলক্ষণং।” “ন্যাসীৎ” এমন কথা তো বলেন নাই। তবে এই ঘোর শূন্যবাদী যজ্ঞনিন্দাকারী “ললিত অবতার” কে ? ইহঁর (ভকৎ) ভক্তগণ সবইতো অনাচরণীয় জাতি। হিন্দুরা-ব্ৰাহ্মণের যাহাঁদের জল খান, এমন জাতি নিতান্ত গরজে-মানেতে না পড়িলে ধৰ্ম্মঠাকুরের কাছে যান। না। ধৰ্ম্মায়ণের অনেক স্থলে দেখিতে পাওয়া যায় যে, ধৰ্ম্মঠাকুরের ভকতে হিন্দুদিগের যথেষ্ট দ্বেষও করে, হিন্দু নাম ধরিয়া গালি দেয়। বোধ হয়, অনেক স্থলে ব্ৰাহ্মণদিগের বিরুদ্ধে মুসলমানদিগকে ইহারাই ডাকিয়া আনিয়াছিল। রামাই পণ্ডিতের পুথিতে শ্ৰীনিরঞ্জনের রুম্মা নামে একটি অধ্যায় আছে সেটি ছোট সকল স্থলে অর্থবোধ হয় না, কিন্তু যাহা হয়, তাহাতেই ভকতগণের হিন্দুদ্বেষ ও যবনমৈত্রী প্ৰকাশ পায়। সে অধ্যায়টি কোন রূপ ংশোধন না করিয়া অবিকল উঠাইয়া দিলাম।