পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भन्म >७०>] সাহিত্য-পরিষদ-পত্রিকা । SN) প্রাচ্য জনপদ হইতেই ক্রমশঃ প্ৰতীচ্য ভূখণ্ডে বিকীর্ণ হইয়াছিল। আরবেরা যদি স্বদেশে ভারতবর্ষীয় ভাষায় ভারতবর্ষ হইতে আনীত শাস্ত্রের প্রচার করিতেন, তাহা হইলে আরব সমাজের শ্ৰীবৃদ্ধি বা জাতীয় সাহিত্যের পরিপুষ্টি হইত না । গ্ৰীক পণ্ডিতগণ যদি গ্ৰীক ভাষায় ভিন্ন দেশ হইতে সংগৃহীত জ্ঞান রাশির আলোচনা না করিতেন, তাহা হইলে গ্রীস ইউরোপে বিদ্যাবুদ্ধির বিস্মরণক্ষেত্র বলিয়া সম্মানিত হইতে পারিত না । ইংরেজ যদি আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন দেশাগত পণ্ডিতগণের উপদেশ শুনিয়া ভিন্ন ভাষায় গ্ৰন্থ প্রণয়ন করিতেন, তাহা হইলে ইংরেজী সাহিত্যের এরূপ অসামান্য উন্নতি লক্ষিত হইত না। বেকন যদিও ভিন্ন ভাষার অলঙ্কারে আপনার গ্রন্থসমূহ অলঙ্কত করিতে অভিলাষী ছিলেন, তথাপি তিনি উহার অধিকাংশ ইংরেজী ভাষাতেই লিখিয়া গিয়াছেন। সারা তামাস ব্ৰাউন লাতিন এবং ইংরেজী, এই দুই ভাষার মধ্যে কাহার। আনুগত্য স্বীকার করিবেন, এই বিষয়ে বিচার বিতর্ক করিয়া শেষে মাতৃভাষারই অনুগত হইয়াছিলেন, এবং মহাকবি মিণ্টন লাতিনে অসামান্য পারদর্শিতার পরিচয় দিয়াও, স্বদেশীয় ভাষায় অপূৰ্ব্ব কাব্যপ্ৰণয়নপূর্বক জগতে চিরপ্রসিদ্ধিলাভ করিয়াছেন। এইরূপে যে দেশের সাহিত্য ও সমাজের ইতিহাসের পাৰ্য্যালোচনা করা যায়, সেই দেশেই স্বদেশীয় ভাষার প্রতি শিক্ষিত সম্প্রদায়ের শ্রদ্ধার পরিচয় পাওয়া গিয়া থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে ইহার ব্যভিচার লক্ষিত হইতেছে কেন ? বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। যুবকগণ পাশ্চাত্য জ্ঞানালোকে আলোকিত হইতেছেন। গৃহে গৃহে পাশ্চাত্য সমাজের গবেষণা, শিক্ষা ও শাস্তুজ্ঞানের বিষয় আলোচিত হইতেছে । কিন্তু মাতৃভাষার প্রতি শিক্ষিতসম্প্রদায়ের অনুরাগ বৰ্দ্ধি ত হইতেছে না কেন ? যুবকগণ যে জ্ঞােনরাশি সংগ্ৰহ করিতেছেন, তদ্বারা জাতীয় ভাষার সৌন্দৰ্য্যবৰ্দ্ধানে উদাসীন রহিয়াছেন কেন ? মহামতি কামোরণের উক্তিতে র্যাহাদের জ্ঞানের উদয় না হয়,-কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠা বলবতী না হয় ; তাহারা শিক্ষিত হইতে পারেন, ভুয়োদশী হইতে পারেন, অভিনব তত্ত্বের আলোচনায় তঁহাদের উৎসাহ থাকিতে পারে, পণ্ডিতমণ্ডলীর সমক্ষে সম্মানিত হইতে তঁহাদের যত্ব হইতে পারে ; কিন্তু তঁাহারা স্বদেশের প্রকৃতকাৰ্য্যকারক ও প্রকৃত হিতৈষী নহেন। অহম্মুখতার প্রচণ্ড আবেগে তঁহাদের লোকহিতৈষিতা, কৰ্ত্তব্য বুদ্ধি, জাতীয় সমাজের উন্নতিসাধনপ্রবৃত্তি, সমস্তই বিপৰ্য্যস্ত হইয়া গিয়াছে। তঁহার কৃতী হইয়াও মাতৃভূমির অকৃতী সন্তান-পণ্ডিত হইয়াও স্বদেশের লোকসমাজে অনাদৃত এবং স্বদেশীয় হইয়াও গরীয়সী জন্মভূমিতে জনসাধারণের মধ্যে বিদেশীর ন্যায় অপরিচিত । ইহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ । কিন্তু এই অভিযোগ স্বদেশের মঙ্গলের জন্য উত্থাপিত হইয়াছে। পূর্বে উক্ত হইয়াছে যে, উপাধিধারিগণ বিদেশী ভাষায় পাণ্ডিত্যপ্রদর্শনে উদ্যত হইলে প্রকৃতপ্ৰস্তাবে দেশের উপকার