পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नन >७०> ] মুকুন্দরাম ও ভারতচন্দ্ৰ । SVS আর জন কহে সখী মোর পতি খোড়া। নড়িতে চড়িতে নারে ঘর করে যোড়া । আর সতী বলে সখী মোর পতি কুঁজা। কুঁজ ভাল হইলে পূজিব দশভূজা ৷ চিত হয়ে শুতে নারে মারি মারি করে। আড়াই হাত খাদ করে মেঝের ভিতরে ৷ লোকের গঞ্জনা আর সহিতে না পারি। সংসার ছাড়িয়া আমি হব। দেশান্তরী ৷ আর জন বলে সই মোর স্বামী কালা । অন্যের সংসার ভাল মোর বড় জ্বালা ৷ ঠারে ঠোরে কথা কহি দিনে পতি সনে। রাত্ৰি হৈলে থাকে যেন পশুর শয়নে ৷ সার্থক তপস্যা গৌরী কৈল অভিলাষে।। সেই হেতু পাইল বর মনের হরিষে৷ অদৃষ্টের কথা কিছু কহনে না যায়। যে লিখিয়া থাকে বিধি অবশ্য তা হয় ৷ আর নারী বলে হোক না ভাবিহ ব্যথা । মনোদুঃখ মনে রাখ ভাল পাবে কোথা । যে হোক সে হােক নারীর স্বামীত ভূষণ। পতি সেবা করা সবে যেন নারায়ণ ৷ এই বর্ণনাটীতে বিশেষ সৌন্দৰ্য নাই, কিন্তু বর্ণনাটী সরল ও স্বাভাবিক। মুকুন্দরাম যাহাই লিখেন, তাহাই সরল ও স্বাভাবিক। নারীগণ আপনাদিগের মন্দ ভাগ্যের বিষয়ে আক্ষেপ করিতেছে বটে, কিন্তু পতিসেবাই যে নারীর পরম ধৰ্ম্ম, এই মহীয়সী কথাও স্মরণ করিতেছে। এই বর্ণনার অনুকরণ করিয়া ভারতচন্দ্ৰ তাহার বিদ্যাসুন্দরে কিরূপে নারীগণের পতিনিন্দা বর্ণনা করিয়াছেন, তাহ পাঠকগণের অবিদিত নাই। মুকুন্দরামের বর্ণনা স্বাভাবিক ও সুপাঠ্য ; ভারতচন্দ্রের বর্ণনা অস্বাভাবিক এবং ভদ্রসমাজে অপাঠ্য। দেবদেবীর কথা সাঙ্গ করিয়া মুকুন্দরাম দুইটী উপাখ্যান লিখিয়াছেন, একটী কালকেতু ও ফুল্লারার উপন্যাস ; অপরটী শ্ৰীমন্ত সওদাগরের উপাখ্যান। দুইটী উপাখ্যানই সরল ভাষায় লিখিত, দুইটীতেই মানবহৃদয়ের স্বাভাবিক বৃত্তি গুলি ও নরনারীর সুখদুঃখ সহজ ভাবে বর্ণিত হইয়াছে। কালকেতু পশু বধ করিয়া জীবন ধারণ করে, তাহার গৃহিণী ফুল্লারা সেই পশু মাংস হাটে বাজারে বিক্রয় করিতে যায়, এবং স্বামীর গৃহ কৰ্ম্ম সম্পাদন করে । চণ্ডরী