পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখলাম, মায়েরা রিকশা করে স্টেশনের দিকে চলে গেলেন । রাজা আমার নাম ধরে মিনু আপা বলে । রাজা আমায় ডেকো-ডেকে কী বলছিল রিকশায় চড়ে, শুনতে পেলাম না। ---- শিরিনের ঘরে গিয়ে উঠলাম। শিরিন দরজা খুলে আমায় ভেতরে ডেকে নিলেন । সন্ধ্যার সময় মনে করলাম, আমি এখানেই থেকে যাব । সেকথা মাসিকে জানালামও । মাসি খুশিই হলেন । সন্ধ্যার আরো কিছু পরে সাদিক এলেন । কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে শুধালেন-আমার কথা তো শুনলে না, মিনু । বললাম-আপনার সব কথা আমি জানি । --সব জান ? কোথা থেকে ? কে বলেছে ? আমি তো তোমায় যা বলব। বলেছিলাম, শুনলে না, না শুনেই কী করে জানলে আমার সব কথা ? --আপনার ডাইরি পড়েছি সাদিক-মামা । | ناسسب মামা ধীরে-বীরে উঠে পড়লেন । আমি ওঁর পিছু-পিছু এগিয়ে এলাম বারান্দায় । সিঁড়ির মুখে এসে দাঁড়ালাম । মামা কয়েক ধাপ নীচে নেমে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন-ওসব কথা আমি নিজের ওপর রাগ করে খুব এক ইমোশনাল সময়ে লিখেছি মিনু। বিশ্বাস করো, আমি যা লিখেছি সেসব আমার মনের কথা নয়। শিরিন কখন ওই ডাইরি চুরি করে r হয় জানতে পারিনি। আরো দু। ধাপ নামলেন মামা । আবার ঘুরে দাঁড়ালেন । বললেন-একটি জটিল নারী-জীবনে আমার আকর্ষণ ঠিক কথা। কিন্তু দেহই আমার কাছে সব ছিল না । তুমি শিরিনকে বলবে । বলবে তো ? দৃঢ় গলায় বললাম-না। কখনও নয়। ককখনও নয়। কিছুতেই না। আমি অত গ্ৰাম্য নই। তুচ্ছ একটা টি-টি পাখি নাই সাদিক মামা । --তাই বুঝি ? বলে সাদিকুল সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসছিলেন । পেছনে, আমার পেছনে এসে মাসি দাঁড়িয়েছেন । সাদিকুল আর উঠলেন না। হাে হাে করে হেসে উঠে ঘরে গেলেন । দ্রুত সিঁড়ি ভেঙে নীচে চলে গেলেন । মাসিও পেছন থেকে সরে চলে গেলেন ঘরের মধ্যে । ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে আমার সহসা দুই চোখে কান্না এসে দুলতে লাগল। কিছু পর বাইরে বাবার কড়া গলা শোনা গেল। মিনু, নেমে আয় । একলা বাড়ি খা-খী করছে । মাসি এসে আমার হাত চেপে ধরলেন । আকুল হয়ে বললেন-যেও না, মিনু। একলা আমার ভয় করছে। আমার উপায় ছিল না। বাবার হুকুম। চলে গেলাম নেমে। বাড়িতে এসে р