পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হতো । রাবেয়া বলত, হামিদ আজ তো তোমার শ্বশুর হওয়ার কথা, বর হচ্ছে কেন ? আমি আজ তোমার মাগ হব না । হা হা হা ! মনে পড়ে ? বললাম, তার পর কতক্ষণই বা বর-কনে খেলা । খেলা ভেঙে যেত । তিনজনে গলা মিলিয়ে ছড়া গাইতাম । হেলাফেলা হয়ে এল মামুর বিয়ে ভেঙে গেল ! রাবেয়া বলত, মামুনয় মামুন ! হামুর বিয়ে বল না কেন ? আমি আর হামুর ভাত খাব না। মামুন ! আমি তোমার ভাত খাব ! --তুচ্ছ একটা খেলা । খেলতে খেলতে, যতক্ষণ মন বসে খেলি, খেয়াল হলেই ধূলিখেলা সাঙ্গ করে দিই। কেতাব কুরান, হাদিস-পুঁথি, কালমা-কলম। সবই ঐ খেলারই নিমিত্ত মাত্র । খতিব বললেন, ঐ নিমিত্তের জোরেই আজও এই মুসলমান সমাজটা টিকে আছে । বললাম, টিকে নেই। জোর করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। একদল মোল্লাগাজী মৌলানার খেয়াল আর স্বার্থপরতার হাতে ঐ নিমিত্তকে সুবিধাবাদের অস্ত্ররূপে তুলে দেওয়া হয়েছে। হজরতের ধর্মে আজ আর প্রাণ নেই। খতিব সাহেব ! আপনারাই তব গলা টিপে নিঃশেষ করেছেন । প্ৰাণটা উবে গেছে, এখন শিকলটাই পড়ে আছে, আজ মানুষ সেই শিকলেরই স্তবগান করছে, অনুশাসন আর বাইরের প্রথা-কানুন, তার জোরেই সেই গাজীপুর থেকে এই দুযোগের রাতে দুটি নরনারীকে আপনারা এতদূর ছুটিয়ে এনেছেন । খতিব সাহেব রেগে ওঠেন, জানতাম তুমি নাস্তিক । তুমি ধর্মের দোষ দেখ, কিন্তু যে নিজের খুতু রাস্তায় ফেলে জিভ দিয়ে চোেট তোলে, তার দোষ দেখ না ! তার শাস্তি হওয়া উচিত নয় ? বললাম, শাস্তি কি ইদৎ-পালন ? একটি বৈধ সুন্দর নারীজীবনকে বেশ্যাবৃত্তির পাঁকে নিক্ষেপ করা ? তার দোষ কোথায় ? নারী কেন শাস্তি পাবে ? খতিব বলেন, চোর না শোনে ধর্মের কিসসা। ইদতের তাৎপর্য বোঝার তোমার সাধ্য কি মামুন ? শুনেছি, তুমি কলেজে হিন্দু নরনারীর অবৈধ মুহকবতের নাটক কিসসা পড়াও । হিন্দু নরনারীর জেনাকে বল প্ৰেম, তাদের অবাধ মেলামেশাকে বল প্ৰগতি । বেপদ মেয়েদের নিয়ে কারবার তোমার । বললাম, পদার আড়ালে রেখে নারীর ইজৎ লুট করার মন্ত্র ঐ নাটক-কিসাসায় নেই। খতিব সাহেব। সেখানে নারীর মর্যাদার কথা লেখা রয়েছে । আপনার সাথে তাঙ্ক করে, বাহাস করে লাভ নেই। বরং যা করতে ७ी6मgछन्म दg: शन्म । রুস্তম বললে, তাই করুন খতিব সাহেব। নিকেটা পড়িয়ে দিয়ে চলুন উঠে পড়ি । বাজে তাকে সময় নষ্ট হবে । 3S