পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উমিচাঁদ।
১২৯

তেন[১]। শেঠদিগের মধ্যে যেমন জগৎশেঠ, বণিকদিগের মধ্যে সেইরূপ উমিচাঁদ নবাব-দরবারে সবিশেষ সুপরিচিত ও পদগৌরবান্বিত হইয়াছিলেন; ইংরাজবণিক বিপদে পড়িলে সর্ব্বদাই তাহার শরণাগত হইতেন; এবং অনেকবার তাহার অনুকম্পাবলেই যে লজ্জারক্ষা হইয়াছিল, এখনও তাহার কিছু কিছু পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়।[২]

 ইংরাজেরা উমিচাঁদের সহায়তা লাভ করিয়াই বাঙ্গালাদেশে বাণিজ্যবিস্তারের সুবিধা পাইয়াছিলেন। তাঁহার যোগে গ্রামে গ্রামে টাকা দাদন করিয়া ইংরাজেরা কার্পাস এবং পট্টবস্ত্র ক্রয় করিয়া প্রভূত অর্থোপার্জন করিতেন। এরূপ সুবিধা না পাইলে, অপরিচিতদেশে ইংরাজের আত্মশক্তি সহজে প্রতিষ্ঠালাভ করিবার অবসর পাইত কি না সন্দেহ। কিন্তু ইংরাজের সঙ্গে দেশের লোকের পরিচয় হইমাত্র বিধাতার বিড়ম্বনায় ইংরাজেরা উমিচাঁদকে উপেক্ষা করিতে আরম্ভ করিলেন। সিরাজদ্দৌলা যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন, তখন ইংরাজবণিক আর পূর্ব্ববৎ উমিচাঁদকে বিশ্বাস করিতেন না; উভয়ের মধ্যে যে মনোমালিন্যের সূত্রপাত হইয়াছিল, তাহা বিলক্ষণ ঘনীভূত হইয়া উঠিয়াছিল।

  1. The extent of his habitation, divided into various departments, the number of his servants continually employed in various occupa. tions, and a retinue of armed men in constant pay, resembled more the estate of a prince, than the condition of a merchant. -Orme, vol. II. 5o.
  2. He had acquired so much influence with the Bengal Government that the Presidency, in times of difficulty, used to employ his mediation with the Nabab.-Orme. vol. II. 50.