পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
সিরাজদ্দৌলা।

এ কথা সম্পূর্ণ সত্য নহে। বিলাতের ‘বৃটিশ মিউজিয়মে’ কাশিমবাজার অবরোধের একখানি হস্তলিখিত ইতিহাস আছে, কেহ কেহ বলেন যে, তাহা ওয়ারেণ হেষ্টিংসের রচিত। মুর্শিদাবাদের ভূতপূর্ব্ব বিচারপতি বিভারিজ্ মহোদয় তাহার কিয়দংশ এ দেশে প্রকাশিত করিয়া[১] অনেকের ভ্রম সংশোধন করিয়া দিয়াছেন। যাহারই রচিত হউক, সেগুলি যে ইংরাজলিখিত সমসাময়িক আত্মকাহিনী, তাহাতে সন্দেহ নাই। তাহা শ্রেণীবদ্ধ ইতিহাস নহে, সুতরাং কোন বিশেষ মতসংস্থাপনের জন্য কিম্বা একজনের দোষে আর একজনেকে অপরাধী করিবার জন্য কোনরূপ প্রয়াস স্বীকার করিতে হয় নাই। ইংরাজ লেখনীর যদৃচ্ছোৎগত সাময়িক কাহিনী বলিয়া সেগুলি যথার্থই সমধিক সমাদরের সামগ্রী।

 কাশিমবাজারের ইংরাজ সওদাগরেরা সকলেই জানিতেন যে, তাঁহারা ঘসেটি বেগমের পক্ষপাতী বলিয়া, আজি হউক, কালি হউক, আর দশ দিন পরেই হউক, বৃদ্ধ নবাবের মানব লীলা অবসানপ্রাপ্ত হইলেই, সিরাজদ্দৌলার সহিত তাহাদিগের তুমুল সংঘর্ষের সূত্রপাত হইবে! সেই জন্য সময় থাকিতে তাঁহারা গোপনে গোপনে কাশিমবাজারের ইংরাজদুর্গে সাধ্যমত গুলি গোলা সংগ্রহ করিতে ত্রুটি করেন নাই। এইরূপে কাশিমবাজারে যে সকল যুদ্ধসরঞ্জাম পুঞ্জীভূত হইয়াছিল, তাহার কথা স্মরণ করিয়া উত্তরকালে কাপ্তান গ্রাণ্ট কতই আক্ষেপ করিয়া গিয়াছেন।[২]

  1. Calcutta Review.}}
  2. We may justly impute all our misfortunes to the loss of that place, (Cassimbazr) as it not only supplied our enemies with artillary and ammunition of all kinds, but flushed them with hopes of __l_ing as easy a conquest of our chief settlement.—Captain Grant.