পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজা জানকীরাম।

 যুদ্ধাবসানে কন্যার বন্ধন মোচন করিয়া আলিবর্দ্দী বিহার প্রদেশে শান্তিস্থাপন করিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। পরাজিত বিদ্রোহীদল নানাস্থানে পলায়ন করিল, লোকে আবার নিরুদ্বেগে সংসার-কার্য্যে মনোনিবেশ করিতে লাগিল; পূর্ণিয়া প্রদেশেও শান্তি সংস্থাপিত আলিবর্দ্দী তখন মহাসমারোহে দরবার করিয়া সাইয়েদ আহ্‌মদকে পূণিয়ার এবং সিরাজদ্দৌলাকে পাটনার নবাব নিযুক্ত করিলেন। সাইয়েদ আহ্‌মদ পূর্ণিয়ায় গমন করিলেন। কিন্তু সিরাজদ্দৌলা বালক বলিয়া রাজা জানকীরাম বিহারের রাজপ্রতিনিধি হইলেন; সিরাজদ্দৌলা বিহারের নামসর্ব্বস্ব নবাব হইয়া মাতামহের সঙ্গে রাজধানীতে ফিরিয়া আসিলেন।

 “রাজা জানকীরাম বঙ্গীয় দক্ষিণরাঢ়ী কায়স্থ। ইনি বাঙ্গালা হইতে দেওয়ান হইয়া আলিবর্দ্দীর নায়েবী আমলে পাটনায় গমন করেন। নাজিম হইয়া আলিবর্দ্দী খাঁ ইঁহাকে প্রথমতঃ দেওয়ান-ই-তন্‌ ও সামরিক বিভাগের প্রধান মন্ত্রিত্বপদে নিযুক্ত করেন। দুর্দ্দান্ত মহারাষ্ট্র কটকের আক্রমণে বিতাড়িত আলিবর্দ্দীর কটক হইতে প্রত্যাবর্ত্তনের সময়, ইনি নবাবের সমভিব্যাহারে ছিলেন। পরে স্বকীয় অর্থদ্বারা নবাবের সৈন্যসংগ্রহাদি কার্য্যের সহায়তা করেন। প্রকৃত পক্ষে ইনিই প্রধান মন্ত্রী ছিলেন। সম্পূর্ণ বিশ্বাসভাজন বলিয়া মহারাষ্ট্রীয় সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিতের প্রাণবধের কল্পনা প্রধান সেনাপতি মুস্তাফা খাঁ ভিন্ন কেবল ইঁহারই নিকট পূর্ব্বে প্রকাশিত হইয়াছিল। * * * অতঃপর রাজা জানকীরামের প্রভুত্ব এত হইয়াছিল যে, নবাবের ভ্রাতুষ্পুত্রেরাও কোনও বিষয়ে দরবার করিতে হইলে মন্ত্রিবরের সাহায্য প্রার্থনা করিতেন। পাটনার ডেপুটি সুবাদার