পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
সিরাজদ্দৌলা
জগৎ। আমি সেই নিমিত্তই রটনা করেছি যে আমার দৌহিত্রের পুত্রের অন্নপ্রাশন।
রাজবঃ। একত্রিত হই আর না হই নবাবের সন্দেহ দূর হবে না। যা হবার তা হয়েছে, অধিক কি হবে। সহসা বল প্রকাশ কর্‌তে সাহসী হবে না, অধিকাংশ সেনানায়কেরা আমাদের অর্থে বশীভূত।
মাণিক। ও সকল চিন্তার অনেক সময় আছে, শুনুন; সাহেবের মন্তব্য, আমি ক্লাইবের নিকট প্রস্তাব করেছিলেম,—ক্লাইব সম্পূর্ণ সম্মত। এই খস্‌ড়া পত্র কাশিমবাজারের ওয়াটস্ সাহেবের নিকট পাঠিয়েছে। তিনি বলেন,—“আমরা মীরজাফর খাঁকে সিংহাসন প্রদান কর্‌লে, তিনি আমাদের কত অর্থ প্রদান কর্‌বেন? আমরা অর্থহীন বণিক। যুদ্ধে বিস্তর অর্থ ব্যয় হবে, তারপর, জয় পরাজয় কে জানে, আমাদের সমূলে উচ্ছেদ হওয়া সম্ভাবনা;—কিছু প্রত্যাশা না থাক্‌লে, আমরা এরূপ কার্য্যে প্রবৃত্ত কেন হব? নবাব সন্ধি ভঙ্গে ইচ্ছুক নয়;—বিনা কারণে সন্ধি ভঙ্গ ক’রে, আমরা কেন বিপদ আহ্বান কর্‌বো? আমরা জয়ী হ’লে মীরজাফর খাঁ সিংহাসন পাবেন, রাজকোষও তাঁর হস্তগত হবে, আমরা সেই অর্থের অংশ প্রার্থী।” এই সন্ধি পত্রের খস্‌ড়া দেখুন, তাঁর মনোগত ভাব অবগত হবেন।
সন্ধিপত্র মীরজাফরকে প্রদান
মর্ম্ম এই,—ফরাসীদের উচ্ছেদ করা, ইংরাজ যা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তজ্জন্য এককোটী টাকা প্রদান, দেশীয় ও ইংরাজ প্রজার ক্ষতিপূরণে সত্তর লক্ষ টাকা, আর্ম্মাণীগণের ক্ষতিপূরণে পাঁচ লক্ষ টাকা, কলিকাতার বাহিরে কতক জমী ও কলিকাতার দক্ষিণ কুলপি পর্য্যন্ত ইংরাজকে জমিদারী প্রদান।