পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অঙ্ক
১১৯
রায়দুঃ। নাও, পাগ্‌লামো করো না।
করিম। চাচা, তোমার নুন খেয়েছি, কথাটা শুনে নাও;—যে যার সব স্বার্থ তো টেঁকে আছো, আখেরে কতটা টেঁক্‌বে, তা একবার ভাব্‌ছ কি? মীরজাফর চাচা তো গদীতে বস্‌বেন,—নবাবটা উৎসন্ন গেলেই তো রায়দুর্লভ চাচার মনের কাঁটা উঠলো,—মোহনলাল বাঙ্গালী, তার দম্ভ সচ্ছে না,—যখন কটা চোখ রাঙ্গিয়ে গড্ ড্যাম করবে, তখন সইবে তো—দেখো? শেঠ চাচা, নবাবই যেন টাকা চায়, গোরার বাচ্ছা টাকার মুখ দেখে না, কেমন? বাবা সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয়ে টাকা কুড়ুতে এসেছে, নবাবকেই দাব্‌ড়ি লাগাচ্ছে, এ সব কথা একবার ভেবো।
রায়দুঃ। চুপ করো। (মীরজাফরের প্রতি) খাঁ সাহেব আর বিলম্ব কর্‌বেন না, ক্লাইব যা বলে, আপনি সম্মত হোন। এ দুরন্ত নবাবের হাতে ত্রাণ কর্‌তে একমাত্র বলবান ইংরাজই সক্ষম। ইংরাজ ব্যতীত আর আমাদের উপায় নাই।
করিম। ভালো মোর বাপরে-চাচারে—কি পরামর্শই এঁটেছ! তোমাদের হ’য়ে গর্দ্দানা দিক ইংরাজ, তারপর মীরজাফর চাচা নবাবী তক্তায় ব’সে চণ্ডু টানুন, রায়দুর্লভ চাচা মন্ত্রী হোন, রাজবল্লভ চাচা আর একটা ঢাকা খুঁজে নেন, বাগে পান আর একটা ঘসেটী বেগম খাড়া কর্‌বেন, আর জগৎশেঠ চাচারা টাকা সুদে খাটান! চাচা, বিদেশী বঁধুরে প্রাণ সঁপো না। চাচা, ভাবছো গর্দ্দানা দেবে ইংরেজ, আর নবাবী করবে তোমরা! সাদা চেহারা চেন না, শেষ পস্‌তাবে; ওরা খুব দাওবাজ, ওদের কাছে কারও দাও চল্‌বে না। চাচা, তোমরা চাল-চলনে মানুষ চেন না? আলিবর্দ্দী, বর্গির ভয়ে সকল জমীদারদের ফৌজ বাড়াতে বলেছিল,