পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ অঙ্ক
১৪৯
প্রাপ্ত হ’লেও কি স্বদেশের গৌরবের প্রতি দৃষ্টি রাখবে না? জন্মভূমির প্রতি লক্ষ্য রাখবে না? আমার বিপুলবাহিনীর অধিকাংশই বিশ্বাসঘাতকদের অধীন, এ বিশ্বাসঘাতকেরা বাঙ্গলার পক্ষে যুদ্ধ জয় না ক’রলে রণজয়ের আশা নাই।—আমার রাজ্যত্যাগে যদি মুসলমানের রাজ্য রক্ষিত হয়, এ ছার রাজ্য আমার প্রয়োজন নাই।

রায়দুর্লভের প্রবেশ

রায়দুঃ। জনাব, কি নিমিত্ত চিন্তা কচ্ছেন, বার বার কি নিমিত্ত সেনাপতিকে ডাক্‌ছেন? ইংরাজ আম্রকাননে আশ্রয় গ্রহণ ক’রেছে, এক্ষণে তাদের আক্রমণ উচিত নয়। বিশেষ আমাদের বারুদ সব নষ্ট হয়েছে, অদ্য যুদ্ধ এই অবস্থায় থাকুক, কাল প্রাতে আক্রমণ মাত্রেই ইংরাজ পতন হবে। সেনাপতি মীরমদন, নিষেধ না শুনে হত হয়েছেন। মোহনলাল যদি নিরস্ত না হন, তা হ’লে বিপদের আশঙ্কা অধিক।
সিরাজ। আপনি সেনাপতিকে একবার আস্‌তে বলুন।

মীরজাফর ও রাজবল্লভের প্রবেশ

রায়দুঃ। এই যে সেনাপতি আগত।
সিরাজ। সেনাপতি—সেনাপতি, আর বিরূপ কেন? এ সময় কেন আমাকে পরিত্যাগ কচ্ছেন? আমি বার বার আপনাদের বলেছি, আমায় যদি অযোগ্য বিবেচনা করেন, আমায় রাজ্যচ্যুত ক’রে যোগ্য বাক্তিকে রাজ্য প্রদান করুন! এই দেখুন, এই রাজমুকুট আপনার পদতলে স্থাপন কচ্ছি, আপনি স্বয়ং গ্রহণ করুন। আসুন, আমি সমস্ত সৈন্যের সম্মুখে আপনাকে বাঙ্গলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব ব’লে অভিবাদন কচ্ছি। আপনি নবাবের মর্য্যাদা, মুসলমানের মর্য্যাদা, বাঙ্গলার মর্য্যাদা, বাঙ্গলার স্বাধীনতা আজ যুদ্ধে রক্ষা করুন।