পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
সিরাজদ্দৌলা

সিরাজদ্দৌলার প্রবেশ

সিরাজ। কেন, তলব কেন? আমায় মার্জ্জনা করো, তিলার্দ্ধ অবকাশ নাই যে তোমার নিকট আসি; অনেক কার্য্য রয়েছে, এখনই দরবারে যেতে হবে।
লুৎফ। এক দণ্ডও কি দাসীর নবাবের সেবা করবার অধিকার নাই নবাবের কি মুহূর্ত্তের জন্য বিরামের সময় নাই?
সিরাজ। প্রিয়ে, নবাবী নয় প্রকৃতপক্ষে দাসত্ব। মাতামহী নিত্য দরবার-সংলগ্ন জানানা-প্রকোষ্ঠ হ’তে দরবার-কার্য্য দেখেন, তুমি তাঁর সঙ্গে থেকো, সকলই বুঝ্‌বে।
লুৎফ। বাঁদীর একটি আবেদন আছে।
সিরাজ। আবেদন! আদেশ বলো! বলো, কি হুকুম?—এই দণ্ডে সমাধা হবে।
লুৎফ। একজন বিদেশিনী রমণী, আমার নিকট আবেদন জানিয়েছে,—রাজ-রোষে তার পতি কারারুদ্ধ। দাসীর মিনতি, কৃপা ক’রে নবাব তার পতিকে পরিত্রাণ দেন। আহা! অতি কাতরা, জানু পেতে করযোড়ে তার মনের বেদনা আমায় জানিয়েছে। পতি-পরায়ণা, পতির নিমিত্ত ব্যাকুলা, নয়ন-জলে গণ্ডস্থল ভেসে গেল, সে বেদনা আমার প্রাণে বেজেছে, সে অভাগিনীর স্বামীর মুক্তি আজ্ঞা হয়।
সিরাজ। তোমার নিকট ওয়াট্‌সের বিবি এসেছিল। যখন তুমি তার প্রতি প্রসন্ন, দরবারে উপস্থিত হ’য়েই তারে মুক্তি প্রদান করবো। অনেক কার্য্য রেখে তোমার অনুরোধে অন্তঃপুরে এসেছি, এখনি দরবারে যেতে হবে। তুমি পরিচারিকা দ্বারা জানালেই আমি ওয়াটস্ ও চেম্বার্সকে মুক্তি দিতেম, এর নিমিত্ত স্বয়ং অনুনয়-বিনয় কেন?