পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
সিরাজদ্দৌলা
নেপথ্যে নকিব ফুকরাণ। নবাব মনসুরোল মোলক সিরাজদ্দৌলা সাহকুলি খাঁ মীরজা মোহম্মদ হায়বৎজঙ্গ বাহাদুর—

সিরাজদ্দৌলার প্রবেশ

সকলের দণ্ডায়মান হইয়া কুর্ণিশ করণ
সিরাজ। আসন গ্রহণ করুন। আপনারা সকলেই অবগত আছেন, যে মহারাষ্ট্রের উপর্য্যুপরি দৌরাত্ম্যে ভূতপূর্ব্ব নবাব আলিবর্দ্দী—রাজা, আমীর, ওমরাহ, জমাদার প্রভৃতিকে স্বীয় অধিকার রক্ষার নিমিত্ত সৈন্য বৃদ্ধি ক’র্‌তে আজ্ঞা দেন। কলিকাতায় ইংরাজেরাও সে সময়ে সেই ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। কিন্তু সুচতুর ইংরাজ, সেই সুযোগে কেবল সৈন্য বৃদ্ধি ক’রেই ক্ষ্যান্ত হয় নাই; স্বাধীন রাজার ন্যায় দুর্গ সংস্কার করেছে। যদিচ এক্ষণে মহারাষ্ট্রীয় উপদ্রব নাই, তথাপি ইংরাজ বলবৃদ্ধি ক’র্‌তে ক্ষ্যান্ত নয়। বিনা আদেশে শত্রুর গতি রোধ কর্‌বার জন্য বাগবাজারে পেরিং নামে একটী দুর্গ নির্ম্মাণ করেছে। এই রাজবিরুদ্ধ আচরণ হ’তে নিরস্ত হবার নিমিত্ত বার বার নবাবদূত প্রেরিত হয়। কিন্তু ইংরাজ, দূতের অবমাননা করেছে স্বেচ্ছাচারী কার্য্য হ’তে নিরস্ত হয় নাই।
জগৎ। জনাব, পেরিং দুর্গ নয়, সামান্য প্রাকার মাত্র।
সিরাজ। পেরিং সামান্য প্রাকার, বোধ হয় শেঠজীর অভিপ্রায় তা ভঙ্গ না ক’রে নবাব-আজ্ঞা লঙ্ঘন হয় নাই। কিন্তু রাজা রাজবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাস যিনি, ঢাকা হ’তে নবাবী অর্থ ল’য়ে কলিকাতায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, তাঁকে ইংরাজ, নবাবের পুনঃ পুনঃ আদেশ উপেক্ষা ক’রে, মুর্শিদাবাদে প্রেরণ করে নাই; এ কিরূপ সঙ্গত বিবেচনা করেন?