পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অঙ্ক
৭৭
তোমার শিবিকায় বস্ত্র জড়িত ক’রে তোমার বহুমূল্য রত্নাদি সঙ্গে দিয়েছিল, সেই ছদ্মবেশী নবাব মহিষীর বাদী।
ঘসেটী। কে তুমি পরিচয় দাও।
জহরা। আমি জহরা, যে হোসেনকুলিকে স্মরণ ক’রে, উচ্চরবে হৃদয়তাপে স্নিগ্ধ নিশীথ-বায়ু সন্তাপিত ক’চ্ছ, সেই হোসেনকুলি আমার স্বামী। তার অতৃপ্ত প্রেতাত্মা আমার সঙ্গে দিবারাত্র ভ্রমণ ক’চ্ছে, তার উত্তেজনায় আমি একমুহূর্ত্ত স্থির নই। সিরাজের শোণিতধারা সে পান করবে; হস্তীপৃষ্ঠে তার মৃতদেহ যেমন নগরে ভ্রমণ করেছে, সিরাজের মৃতদেহ তেমনি হস্তীপৃষ্ঠে নগর ভ্রমণ ক’রবে, তার পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাবে,—সিরাজকে কবরে দেখে সেই অতৃপ্ত আত্মা তবে সে নিজ কবরে প্রবেশ ক’রবে! নচেৎ সে শান্ত হবে না, শোণিত-তৃষায় হা হা রবে সে আমার আহার নিদ্রা হরণ ক’রেছে! তুমিও প্রেতিনী, পিশাচিনী, নরক-সহচরী, আমিও প্রেতিনী, পিশাচিনী, নরক-সহচরী! নারকীয় সয়তানী-শক্তিতে আমার হৃদয় পরিপূর্ণ। আমি তোমার সঙ্গিনী, প্রতিবিধিৎসার সহচরী, আমায় অবিশ্বাস ক’রো না।
ঘসেটী। তুমি কি এখন আর নবাব-মহিষীর বাঁদী নও?
জহরা। না,—বাঁদীর গদ্দিস কি আমার অঙ্গে দেখছ? আমি নানা বেশধারিণী। যে কার্য্যে নবাব-মহিষার বাঁদী হ’য়েছিলুম, সে কার্য্য উদ্ধার হ’য়েছে, আর আমার বাঁদী হবার প্রয়োজন নাই। তোমার জহরৎ গোপনে তোমায় অর্পণ কর্‌বার জন্য বাঁদী-বেশ ধারণ ক’রেছিলেম। একটি হীরকখণ্ড তাহ’তে গ্রহণ করেছি; আপনার কার্য্যে নয়, তোমার কার্য্যে। আমি তোমার পাপসহচরী। তোমার গুপ্ত ধনাগার আমি জানি, তোমার নিকট তার চাবি