পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অঙ্ক
৮১

ঘসেটী বেগমের প্রবেশ

ঘসেটী। এ কি। আজ সমস্ত নগর রণজয়-উৎসব ক’রছে, রাজপুরে উৎসব, তুমি একপার্শ্বে এই ক্ষুদ্র উপবনে কেন?
লুৎফ। শ্রেষ্ঠিপ্রবর মহাতাবচাঁদ, নবাবের অভ্যর্থনার জন্য, উপবন সজ্জিত করেছেন। আমিও মা আজ নবাবের অভ্যর্থনার জন্য আমার স্বহস্ত-রোপিত উপবন কেমন সজ্জিত ক’রেছি দেখুন। মাসী মা, আজ আমি নবাব প্রত্যাগমন ক’রলে, বিশ্রাম-গৃহে যেতে দেব না, আমি এইখানে তাঁরে অভ্যর্থনা ক’র্‌বো। দেখুন কোথায় কি ত্রুটি আছে বলুন?
ঘসেটী। নবাবের আসন তো রেখেছ, পার্শ্বে তোমার আসন কই?
লুৎফ। আমি নবাবের প্রজা, আমি নবাবের পার্শ্বে বস্‌বো কেন? আমার উপবনে নবাব নিমন্ত্রিত, আমি নবাবকে পূজা ক’র্‌বো আমার আসন তাঁর পদতলে। আপনি আসন গ্রহণ করুন, যদি পূজার ত্রুটি হয় ব’লে দেবেন। মাসীমা দেখুন—এই উপবন রাজ্যের আদর্শ স্বরূপ। এই দেখুন, এই কণ্টকপূর্ণ বৃক্ষ, সকতজঙ্গের অনুরূপ,—তার উপর নবাবের যশোপুষ্প বিকশিত, সৌরভে দেশ আমোদিত ক’চ্ছে। এই দেখুন, পুষ্পিত বৃক্ষ সকল কুসুমভারে অবনত, বিনীত ভাবে নবাবকে রাজভক্তি প্রদান ক’রবে। এই দেখুন, শেফালিকাদ্বয় দ্বারপালের ন্যায় দণ্ডায়মান—ভক্তি-কুসুম উপহার দিয়ে রাজদর্শকবৃন্দকে শিক্ষা প্রদান ক’র্‌বে। এই দেখুন, উদ্যান-কণ্টক সকন স্বহস্তে নির্ম্মূল ক’রে লতাবন্ধন ক’রে রেখেছি। নবাবের কণ্টক, নবাবের শত্রু, এইরূপ বন্ধনদশায় উচ্ছেদ হ’য়ে রাজ্যের এক পার্শ্বে পতিত থাক্‌বে। যে সকল তরুলতা অনিয়মে শাখা প্রসারণ করেছিলো, সে সকল