পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যশোদানন্দকে ভাইরা যেরূপ শ্ৰদ্ধা করিও, এক্ষণে তাহ অপেক্ষাও বেশী শ্ৰদ্ধা কৱি৬ে লাগিল। ক্রমে তাহারা যশোদানন্দের উপদেশে ইসলাম ধর্মের প্রতিও গভীর অনুরাগ প্ৰকাশ করিতে লাগিল। অতঃপর দ্বর্ণ তাহদের সহানুভূতি এবং সাহায্যে জহিরুল হকের খাদ্যের অসুবিধা দূর করিল। নানা প্রকার উৎকৃষ্ট তোজাজাত সরবরাহ করিতে লাগিল। স্বর্ণময়ী জহিরুল হকের উদ্ধারের জন্য মন্তিক বিলোড়ন করিতে লাগিল বটে, কিন্তু সহসা কোন নিরাপদ পন্থা উদ্ভাবন করিতে পারিল না। স্বর্ণ নিজের জীবনকে বিপদাপন্ন করিয়াও জহিরুল হককে মুক্ত করিবার জন্য প্রহরীকে অর্থলোভে বশীভূত করিতে চেষ্টা করিল। কিন্তু জহিরুল হক কিছুতেই সেরূপ ভাবে অন্যের জীবনকে বিপদাপন্ন করিয়া কারাগার হইতে পলায়ন করিতে রাজি হইলেন না। অতঃপর স্বর্ণ সহসা একদিবস শিরঃপীড়ার ভাণ করিয়া আহার নিদ্ৰা পরিত্যাগ করিল। কোনও রূপেই সে শিরোবেদনার লাঘব হইল না, বরং শিরঃপীড়ার সহিত নানা উপসর্গ আবির্ভূত হইয়া স্বর্ণকে যারপর-নাই ব্যতিত করিয়া তুলিল। কবিরাজ এবং হাকিমগণ স্বর্ণের এই আকস্মিক ব্যাধির কোন প্ৰতিকার করিতে পারিলেন না। অবশেষে স্বর্ণ একদিন শেষ রাত্ৰিতে গভীর চীৎকার করিয়া নিদ্রা হইতে শয্যায় উঠিয়া বসিল । স্বর্ণের জননী এবং পিতা সে-চীৎকারে ব্যস্ত-সমস্ত হইয়া কারণ জিজ্ঞাসু হইলে, স্বর্ণ বলিল, “উপাস্য কালিকাদেবী এসে রোষকষায়িতনেত্ৰে গভীরভাবে আমাকে বললেন যে, “তুই যদি বাঁচতে চাস, তা হলে তোর পিতাকে বলে কুলগুরুকে শীঘ্ৰ মুক্ত করে দে। নতুবা এই অগ্নিময় মুখে তোকে গ্রাস করব।' এই বলে মুখব্যাদান করলেন, অমনি তাঁর মুখ হতে ভীষণ অগ্নিশিখা বহির্গত হতে লািগল! ভয়ে আমি চীৎকার করে উঠলাম।” স্বৰ্ণময়ীর স্বপ্নবৃত্তান্ত শুনিয়া কেদার রায় তাহা যথাৰ্থ বলিয়া বিশ্বাস করিলেন এবং কন্যার মঙ্গলাকাঙ্ক্ষায় পরদিন প্ৰত্যুষেই জহিরুল হককে কারামুক্ত করে দিলেন। জহিরুল হক স্বর্ণের উপস্থিত-বুদ্ধি এবং অসাধারণ সহানুভূতির পরিচয় পেয়ে পরমেশ্বরের সমীপে তাহার অজস্র মঙ্গল কামনা করিলেন। বলা বাহুল্য, সেইদিন দ্বিপ্রহর হইতে স্বর্ণময়ীর শিরঃপীড়া আরোগ্য হইল। উমৰিংশ পরিচ্ছেদ উৎকণ্ঠা ঈসা খাঁ দাক্ষিণাতো জেহাদের জন্য গমন করিবার পরে স্বর্ণময়ী দুর্ভাবনায় উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিল। পিতার অসন্মতি প্রকাশে এবং ঈসা খর জেহাদ গমনে তাহার চিত্ত বিষম ব্যাকুল হইয়া পড়িল। হায়! সে যাহাকে সম্পূর্ণরূপে আপনার হৃদয়-মান Soo