পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না। বেজায় গরম ! অত্যন্ত শীতল-রক্ত ব্যক্তির গা দিয়াও দরদীর ধারায় ঘাম দুটিয়াছে। চািটর পূর্ব পার্শের রাস্তার অপর দিকন্তু সবুজ জঙ্গলে অসংখ্য জোনাকী অগ্নি-স্মৃলিঙ্গের ন্যায় অথবা প্রেমিক-কবিচিত্তের মধুময়ী কল্পনা-বিলাসের ন্যায় জুলিয়া জুলিয়া এক চিত্তবিনোদন নয়ন-মোহন শোভার সৃষ্টি করিয়াছে। দূরে একটি উন্নত আমগাছের শাখায় বসিয়া একটি পাপিয়া তাহার সুমধুর স্বরলিহরীতে নীরব-নিথর পবন-সাগরে একটি অমৃতের ধারা দুটাইল্মা দিতেছিল। সেই স্বরের অমৃত-প্রবাহ, কঁপিয়া কাপিয়া দূরে—দূরে-অতি সুদূরে-- নীলাকাশের কোলে মিশাইয়া যাইতেছিল। কিছু পরে দূরবতী গ্রামের বংশকুঞ্জের মধ্যে আরও একটি পাপিয়া, আম্রশাখায় উপবিষ্ট পাপিয়াটির প্রত্যুত্তরচ্ছলে গাহিতে লাগিল। উহা স্বপ্নরাজ্যের সাগর-পারস্থ বীণাধানির ন্যায় মধুর হইতে মধুরতর বলিয়া বোধ হইতেছিল। তাহার সেই ঝঙ্কারও কাপিয়া কাঁপিয়া শ্রুতি-মূলে প্রেম-স্মৃতি জাগাইতেছিল। সকলের তামাকু সেবন শেষ হইলে যুবকটি বলিল, “শিবু, আর দেৱী করা সঙ্গত নয়। পান্ধী উঠাও। সাদুল্লাপুর এখনও প্রায় দু'ক্ৰোশ । অনেক রাত্রি হচ্ছে, স্বর্ণের বোধ হয় ক্ষুধাও লেগেছে।” শিবনাথ বলিল,-“কর্তা! আমরা এতক্ষণ সাদুল্লাপুরের ঘাটে যেয়ে পইছতাম; কেবল ঘাট-মাঝির দোষেই এত বিলম্ব হল । বেটা অমনতর ভাঙ্গা নীেকায় খেয়া দেয় যে, আমার তো দেখেই ভয় করে। যাবার সময় ঐ নীেকায় কিছুতেই পার হব না।” যুবক : যাবার সময় ভাল নীেকা না পেলে বেটার হাডউী চুর করে দিব। আজ ভাঙ্গা নীেকার জন্য ক্রমে ক্রমে পার হতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে। এমন সময় পান্ধীর দ্বার খুলিবার খসি খসি শব্দ শোনা গেল। যুবক মুখ ফিরাইয়া পান্ধীর দিকে চাহিয়া বলিল, “কি স্বর্ণ! বড় গরম বোধ হচ্ছে? বাইরে বেরুবি?” পাষ্ঠীর ভিতর হইতে মধুর ঝঙ্কারে উত্তর হইল, “হাঁ দাদা! বড় গরম! সমস্ত শরীর ঘোমে ভিজে গেছে। পান্ধীর ভিতরে বসে বসে হাত-পা একেবারে লেগে CCT * যুবক : শিবু! পান্ধীর দরজা খুলে দাও। আর একখানি গালিচা ঐ ঘাসের উপর বিছিয়ে দাও। স্বর্ণ একটু বাইরে শরীর ঠাণ্ড করুক। বড় গরম পড়েছে। স্বর্ণ একটু ঠাণ্ডা হলে তোমার পান্ধী উঠাও। শিবনাথ যুবকের আদেশ মত ভার হইতে একখানি গালিচা লইয়া গাছ হইতে একটু দূরে খোলা আকাশের নীচে, যেখানে খানিকটা জায়গা ঘাসে ঢাকা ছিল, সেইখানে বিছাইয়া দিল। তারপর পান্ধীর দরজা খুলিয়া ডাকিল, “দিদি ঠাকরুণ! বাইরে আসুন । বিছানা পেতেছি।” সহসা পাষ্ঠীর ভিতর হইতে বহুমূল্য পীতবর্ণ বুণিারসী শাড়ী-পরিহিতা, রত্নালঙ্কারজাল-সমােলকৃত এক উদ্ভিন্ন-যৌবনা অপূর্ব ষোড়শী সুন্দরী বহির্গত (?