পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আফজাল খাঁর আনীত নানাপ্রকারের উৎকৃষ্ট মিষ্টান্ন, মোরব্বা, হালুয়া এবং ফলমূল সমস্ত প্ৰকাণ্ড প্ৰকাণ্ড চুপড়িতে করিয়া অন্তঃপুরে নীত হইল । আফজাল খাঁ এবং তাঁহার সঙ্গীয় কতিপয় বিশিষ্ট লোককে প্রাচীর ৰেষ্টিত একটি উদ্যানবাটিকার মধ্যস্থ সুন্দর গৃহে স্থান দেওয়া হইয়াছিল। শিবাজী সেইখানে আসিয়া আফজাল খাঁ এবং অমাত্যবৰ্গকে বিশেষভাবে অভ্যর্থনা এবং সদ্বর্ধনা করিলেন। শিবাজীর বিনয়নম্র ব্যবহার, মধুর সাদর সম্ভাষণ ও সশ্রদ্ধ যত্নে সকলেই পরম পরিতোষ লাভ করিলেন। বিংশ পরিচ্ছেদ আজ বৈশাখী পূর্ণিমা। জ্যোৎস্না-জালে জগনুগুল যেরূপ মনোহারিণী শোভা ধারণ করিয়াছে, রায়গড়ের রাজবাটীও আজ তেমনি আলোক ও পুষ্প পতাকা সজায় পূর্ব দিন অপেক্ষাও যেন অধিকতর শোভায় প্রদীপ্ত এবং পুলকিত হইয়া উঠিয়াছে! সমস্ত দিন ভোজের বিপুল উৎসব অন্তে মগরেবের নামাজের পরে যথারীতি ইসলাম প্রথানুযায়ী উদ্বাহ-ক্রিয়া সম্পন্ন হইল। অতঃপর জামাতা আফজাল খাকে অন্তঃপুরে আনয়নের ব্যবস্থা হইল। অন্তঃপুরের একটি নির্দিষ্ট অট্টালিকা বাসরের জন্য পূর্বে হইতেই আরান্তা করা হইয়াছিল। আফজাল খাকে সেই অট্টালিকায় লইয়া বসাইবার কিছু পরেই অন্তঃপুরে ভীষণ আর্তনাদ উথিত হইল। সে আর্তনাদে অন্তঃপুরের যে যেখানে ছিল সকলেই চকিত হইয়া শিহরিয়া উঠিল! “খুন। খুন!! তারা খুন হয়েছে।” এই ভীষণ অশনিপাততুল্য শব্দ পুনঃ পুনঃ শ্ৰকৃত হইতে লাগিল! শিবাজী এবং আফজাল খাঁ উঠিতে পড়িতে প্রাঙ্গণে ছুটিয়া গেলেন!। স্ত্রীলোকদিগের ভিড় ঠেলিয়া সত্যই দেখিতে পাইলেন যে, সালঙ্কারা সুসজিতা তারা বুকে শাণিত-চুরিকা-বিদ্ধ-অবস্থায় ভূতলে পতিত রহিয়াছে! রক্তে মেদিনী ভাসিয়া যাইতেছে! ছুরিকা তনুহুর্তেই বক্ষ হইতে তুলিয়া লওয়া হইল। চিকিৎসার যথারীতি বন্দােবন্ত হইল! কিন্তু হায়! সকলি বৃথা।। তীক্ষ্ণধার দুরিকায় হৃদপিণ্ড বিদীর্ণ হইয়া গিয়াছিল! সুতরাং অল্পক্ষণের মধ্যেই তারা প্ৰাণত্যাগ কৰেিল। এই লোমহর্ষণকর নিদারুণ সাংঘাতিক ঘটনার বৃত্তান্ত এই যে, তারাকে যখন নববধূবেশে সাজাইয়া বাসর ঘরের দিকে লইয়া যাওয়া হইতেছিল, তখন প্রাঙ্গণে অবস্থিত একখানি পান্ধির ভিতর হইতে সহসা মালোজী নিৰ্গত হইয়া শানিত-কুরিকা তারার বক্ষে বিদ্ধ করিয়া দেন। ছুরি বিদ্ধ করিয়াই মালোজী উর্ধশ্বাসে দরজার দিকে ছুটিয়া যান! আবারবান বাধা দিতেই দ্বারবানকেও দুরি (ሎw9