পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই পত্ৰ পাইয়া নাজীব-উদ্দৌলা এবং শাহু আলম বলিলেন, “ইহা কদাপি ভরতপুরের কার্য নহে। ছাত্রসিংহ চরিত্রবান এবং ধাৰ্মিক। ইহা নিশ্চয়ই কোনওনা-কোনও মারাঠীদলেরই কাৰ্য। তাহারা ব্যতীত এমন কাৰ্য আর কাহারও স্বারা मक्द नां ।" কিন্তু সদাশিব রাও বলিলেন, “ইহা নিশ্চয়ই জাঠদিগের কার্য। তাহা না হইলে “মাচার উপরে কে রে?” তার উত্তর আমি কলা খাই না।” এরূপ গর্টনা ঘটিবার কোনও কারণ নাই। ভরতপুরপতি ছত্রসিংহ গায়ে পড়িয়া নিজেই নিজের দোষ ক্ষালন করিয়াছেন। আমরা তো তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করি নাই যে, তিনি পত্ৰ লিখিয়া নিজের সাফাই গাহিবেন । অযাচিতভাবে এই পত্র লেখাতেই তাহার অপরাধ প্ৰতিপন্ন হইতেছে।” অতঃপর সফদরজঙ্গ এবং বাদশাহের প্রেরিত কয়েকজন গুপ্ত-সন্ধানীকে অৰ্থ দ্বারা বশীভূত করিয়া, সদাশিব রাও সন্ধান দেওয়াইলেন যে, ফিরোজা বেগম ভরতপুর-প্রাসাদেই আছে। এইরূপ ষড়যন্ত্রের ফলে বাদশাহ্ এবং সফদরজঙ্গ ক্ৰমশঃ বিশ্বাস করিলেন যে, ইহা ভরতপুর-রাজ্যেরই কাৰ্য। কিন্তু নাজীব-উদ্দৌলা কিছুতেই তাহা বিশ্বাস করিলেন না। তবে কঠোরভাবে প্রতিবাদও করিলেন না। পরামর্শ ঠিক হইল যে, ভরতপুর আক্রমণ করিয়া ফিরোজাকে উদ্ধার করিতে এবং ছত্রসিংহকে কঠোর শান্তি প্ৰদান করিতে হইবে। সদাশিব রাও সর্বপ্রকারে সাহায্য করিতে প্রত্নত হইলেন। সুতরাং ভরতপুর আক্রমণে “সাজ সাজা” রব পড়িয়া গেল। পঞ্চম পরিচ্ছেদ সেতারার সুসজিত একটি প্রাসাদে ফিরোজা বেগমের বাসের বন্দোবন্ত হইয়াছে। ফিরোজা বেগমের নাম লক্ষ্মীবাঈ রাখা হইয়াছে। তাহার সেবার জন্য উপযুক্ত সংখ্যক দাসদাসীর বন্দোবস্ত করা হইয়াছে। সুখ-সুবিধার জন্য কোনও ক্রটি নাই। কিন্তু হায়! বন্দীর মনে আবার সুখ কবে? স্বাধীন বন-বিহাৱী বিহঙ্গকে বহু যত্নে সুবর্ণ-পিঞ্জরে আবদ্ধ রাখিলে এবং পৃথিবীর নানা দেশের সুরসাল ও সুললিত ফলমূল দান করিলেও, তাহার প্রাণে অশান্তি এবং আত্মাগ্লানি কখনও বিন্দুমাত্রও দূর হয় না। আর মানুষ-জীবশ্ৰেষ্ঠ মানুষ, তাহার মধ্যে কোমলপ্ৰাণী রসাবতী চরিত্রাবতী যুবতী --যাহার জীবনের উচ্ছসিত প্ৰেম-প্রবাহ যাহা শুধু পতির উদ্দেশ্যে মাত্র সঞ্চিত হইয়াছিল, কিন্তু প্রবাহিত হইবার সময় পায় নাই, তাহার অন্তৰ্বেদনােৱ কে ইয়াত্তা করিবে? একে বিরহবেদনা, তাহার উপর বন্দীদশায় হীনতার জ্বালা, তদুপরি ধর্মনাশের আশঙ্কা। দারুণ দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগৈ ফিরোজা বেগম বসন্তের Σ