তৃতীয় খণ্ড–একাদশ পরিচ্ছেদ 為うや যমুনা। সে আবার কি মা ! তোমার ঔষধ তোমায় আবার বেচিব কি ? রম । টাকা নিয়া তুমি যদি আমায় বড়ি বেচ, তা হ’লে তোমার আর তাতে কোন অধিকার থাকিবে না। চাই আমি খাই, চাই না খাই, তুমি আর কথা কহিতে পাবে না । যমুনা কিছুক্ষণ ভাবিল। সে বুদ্ধিমতী ; মনে মনে বিচার করিল যে, এ ত মরিবেই, তবে আমি টাকাগুলা ছাড়ি কেন ? প্রকাশ্বে বলিল, “ত মা, তুমি যদি খাও, ত টাকা দিয়াই নাও, আর অমনিই নাও, নাও না কেন । আর যদি না খাও, ত আমার কাছে ওষুধ পড়ে থেকেই কি ফল ?” অতএব চুক্তি ঠিক হইল। যমুনা টাকা লইয়া ঔষধ রমাকে বেচিল। রম ঔষধের কতকগুলা পিকদানিতে ফেলিয়া দিল, কতক বালিশের নীচে গুজিল । উঠিতে পারে না যে, অন্তক্র রাখিবে । এ দিকে, ক্রমশঃ শরীরধ্বংসের লক্ষণ সকল দেখা দিতে লাগিল । নন্দ প্রত্যহ রমাকে দেখিতে আসে, দুই এক দণ্ড বসিয়া কথা বাৰ্ত্ত কহিয়া যায়। নন্দ দেখিল যে, মৃত্যুর ছায়া পড়িয়াছে ; যাহার ছায়, সে নিকটেই । নন্দ ভাবিল, “হায়! রাজবাড়ীর কবিরাজগুলোকেও কি ডাকিনীতে পেয়েছে ?” নন্দ একেবারে কবিরাজের দলকে ডাকিয়া পাঠাইল । সকলে আসিলে নন্দ অন্তরালে থাকিয়া দিগকে উত্তম মধ্যম রকম ভৎসনা করিল। বলিল, “যদি রোগ ভাল করিতে পার না, তবে মাসিক লও কেন ?” এক জন প্রাচীন কবিরাজ বলিল, “মা ! কবিরাজে ঔষধ দিতে পারে, পরমায়ু দিতে পারে না ।” নন্দ বলিল, “তবে আমাদের ঔষধেও কাজ নাই, কবিরাজেও কাজ নাই । তোমরা আপনার আপনার দেশে যাও।” কবিরাজমণ্ডলী বড় ক্ষুন্ন হইল। প্রাচীন কবিরাজটি বড় বিজ্ঞ। তিনি বলিলেন, “মা ! আমাদের অদৃষ্ট নিতান্ত মন্দ, তাই এমন ঘটিয়াছে। নহিলে, আমি যে ঔষধ দিয়াছি, তাহ সাক্ষাৎ ধন্বন্তরি। আমি এখনও আপনার নিকট স্বীকার করিতেছি যে, তিন দিনের মধ্যে আরাম করিব, যদি একটা বিষয়ে আপনি অভয় দেন।” নন্দ জিজ্ঞাসা করিল, “কি চাই ?” কবিরাজ বলিল, “আমি নিজে বসিয়া থাকিয়া ঔষধ খাওয়াইয়। আসিব।” বুড়ার বিশ্বাস, “বেটি ঔষধ খায় না ; আমার ঔষধ খাইলে কি রোগী মরে ” S(t
পাতা:সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।