চন্দ্র। বেতন পায় না।
রাজা। কেন পায় না?
চন্দ্র। টাকা নাই।
রাজা। এখনও কি চুরি চলিতেছে না কি?
চন্দ্র। না, চুরি বন্ধ হইয়াছে। কিন্তু তাতে কি হইবে? যে টাকা চোরের পেটে গিয়েছে, তা ত আর ফেরে নাই!
রাজা। কেন, আদায় তহশীল হইতেছে না?
চন্দ্র। এক পয়সাও না।
রাজা। কারণ কি?
চন্দ্র। যাহাদের প্রতি আদায়ের ভার, তাহারা কেহ বলে, “আদায় করিয়া শেষ তহবিল গরমিল হইলে শূলে যাব না কি?”
রাজা। তাহাদের বর্তরফ করুন।
চন্দ্র। নূতন লোক পাইব কোথায়? আর কেবল নূতন লোকের দ্বারায় কি আদায় তহশীলের কাজ হয়?
রাজা। তবে তাহাদিগকে কয়েদ করুন।
চন্দ্র। সর্ব্বনাশ! তবে আদায় তহশীল করিবে কে?
রাজা। পনের দিনের মধ্যে যে বাকী বকেয়া সব আদায় না করিবে, তাহাকে কয়েদ করিব।
চন্দ্র। সকল তহশীলদারেরও দোষ নাই। দেনেওয়ালারা অনেকে দিতেছে না।
রাজা। কেন দেয় না?
চন্দ্র। বলে, “মুসলমানের রাজ্য হইলে দিব। এখন দিয়া কি দোকর দিব?”
রাজা। যে টাকা না দিবে, যাহার বাকী পড়িবে, তাহাকেও কয়েদ করিতে হইবে।
চন্দ্রচূড় হাঁ করিয়া রহিলেন। শেষ বলিলেন, “মহারাজ, কারাগারে এত স্থান কোথা?”
রাজা। বড় বড় চালা তুলিয়া দিবেন।
এই বলিয়া বাকিদার ও তহশীলদার, উভয়ের কয়েদের হুকুমে স্বাক্ষর করিয়া রাজা চিত্তবিশ্রামে প্রস্থান করিলেন। চন্দ্রচূড় মনে মনে শপথ করিলেন, আর কখনও রাজাকে রাজকার্য্যের কোন কথা জানাইবেন না।