প্রথম খণ্ড-দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ 3. আয়ি হৈ। মুকে কুছ্ মেলেগ, তোমকে বি কুছ্ মেল সকৃত হয়। তোম জলদী আও ” .* জীবন ভাণ্ডারীর বয়স কিছু বেশী, কতকগুলো চাবি ঘুৰ্সিতে ঝোলান। মুখ বড় রুক্ষ। কিঞ্চিং লাভের প্রত্যাশ পাইয়া সে শীঘ্ৰ বাহির হইয়া আসিল । দেখিল, দুইটি স্ত্রীলোক দাড়াইয়া আছে। জিজ্ঞাসা করিল, “কে ডেকেছ গ৷ ” : '... পাচকড়ির মা বলিল, “এই আমার ঘরে কিছু তরকারি হয়েছে, তাই ডেকেছি। কিছু বা তুমি নিও, কিছু বা দরওয়ান্জীকে দিও, আর কিছু বা সরকারীতে দিও।” জীবন ভাণ্ডারী। তা তোর বাড়ী কোথা বলে যা, কাল যাব । পাঁচকড়ির মা। আর একটি দুঃখী অনাথ মেয়ে এয়েছে, ও কি বলবে একবার শোন । ঐ গল। পৰ্য্যন্ত ঘোমটা টানিয়া প্রাচীরে মিশিয়া এক পাশে দাড়াইয়াছিল। জীবন ভাণ্ডার তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া রুক্ষভাবে বলিল, “ও ভিক্ষে শিক্ষের কথা আমি হুজুরে কিছু বলিতে পারিব না।” পাচকড়ির মা তখন অস্ফুট স্বরে ভাণ্ডারী মহাশয়কে বলিল, “ভিক্ষে যদি কিছু পায় ত অৰ্দ্ধেক তোমার।” ভাণ্ডারী মহাশয় তখন প্রসন্নবদনে বলিলেন, “কি বল মা ?” ভিখারির পক্ষে ভাণ্ডারীর প্রভুর দ্বার অবারিত। শ্ৰী ভিক্ষার অভিপ্রায় জানাইল, সুতরাং ভাণ্ডারী মহাশয় তাহাকে মুনিবের কাছে লইয়া যাইতে বাধ্য হইলেন । ভাণ্ডারী স্ত্রীকে পৌছাইয়া দিয়া প্রভুর আজ্ঞামত চলিয়া গেল। শ্ৰী আসিয়া দ্বারদেশে দাড়াইল । অবগুণ্ঠনবতী, বেপমান । গৃহকর্তা বলিলেন, “তুমি কে ?” ঐ বলিল, “আমি ঐ ” “ঐ ! তুমি তবে কি আমাকে চেন না ? না চিনিয়া আমার কাছে আসিয়াছ ? আমি সীতারাম রায় ।” তখন ঐ মুখের ঘোমটা তুলিল। সীতারাম দেখিলেন, অশ্রুপূর্ণ বর্ষাবারি-নিষিক্ত পদ্মের ন্যায়, অনিন্দ্যমুন্দরমুখী। বলিলেন, “তুমি শ্ৰী ! এত সুন্দরী !" ঐ বলিল, “আমি বড় দুঃখী। তোমার ব্যঙ্গের যোগ্য নহি ।” শ্ৰী কঁাদিতে লাগিল । সীতারাম বলিলেন, “এত দিনের পর কেন আসিয়াছ ? আসিয়াছ ত অত কাদিতেছ কেন ?” R
পাতা:সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।