পৃ.১১, পংক্তি ১২-১৫, “আমরা আজিকার ... কিছু ক্ষণ পরে” এই অংশের পরিবর্ত্তে ছিল—
সীতারাম একখানি ভাল বাড়ী তাঁহাকে থাকিতে দিয়াছিলেন।
পৃ.১১,পংক্তি ১৭-২০, “কথাবার্ত্তার ফল...পাঠাইয়া দিলেন।” এই অংশের পরিবর্ত্তে ছিল—
চন্দ্রচূড়ের কাছে লুকাইবার যোগ্য সীতারামের কোন কথাই ছিল না। শ্রীর কাছে আর রমার কাছে যে দুইটি প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন, সীতারাম তাহা সবিস্তারে নিবেদিত হইলেন। বলিলেন, “এই উভয় সঙ্কটে কি প্রকারে মঙ্গল হইবে, আমি বুঝিতে পারিতেছি না। নারায়ণ মাত্র ভরসা। মারামারি কাটাকাটিতে আমার কিছুমাত্র প্রবৃত্তি নাই আমি সেই জন্যই মৃন্ময়কে সরাইয়াছি। কিছু স্তুতি মিনতিতেও কার্য্যসিদ্ধি হইবে, এমন ভরসা করি না। যাই হৌক, প্রাণপাত করিয়াও আমি এ কাজ উদ্ধার করিতে রাজি আছি। সিদ্ধি আপনার আশীর্ব্বাদ। যদি সিদ্ধি না হয়, তবে পাপশান্তির জন্য কাল প্রাতে তীর্থযাত্রা করিব। তাই আপনাকে প্রণাম করিতে আসিয়াছি।”
চন্দ্রচূড়। আমি সর্ব্বদাই আশীর্ব্বাদ করিয়া থাকি, এখনও করিতেছি, মঙ্গল হইবে। সম্প্রতি এই রাত্রেই কি তুমি কাজির নিকট যাইবে?
সীতা। না। কাল উপযুক্ত সময়ে কাজির নিকট উপস্থিত হইব।
চন্দ্রচূড় তর্কালঙ্কার, সহজ লোক নহেন। তিনি মনে মনে ভাবিতেছিলেন, “বাবাজি একটু গোলে পড়িয়াছেন, দেখিতেছি। যুদ্ধ বিগ্রহে যে ইচ্ছা নাই, সে কথাটা মনকে চোক্-ঠারাই বোধ হইতেছে। সেই রুক্মিণী বেটীই যত নষ্টের গোড়া। তা বেটী মনে করে কি, রুক্মিণী আছে, নারদ নাই! জাত নেড়ে, বাপু বাছার কি কাজ! নারায়ণ কি নেড়ের দমন করিবেন না? কত কাল আর হিন্দু এ অত্যাচার সহ্য করিবে? একবার দেখি না, সীতারামের বাহুতে বল কত? বৃথাই কি নারায়ণকে তুলসী দিই?”
এইরূপ ভাবিতে ভাবিতে তর্কালঙ্কার বলিলেন, “তুমি তীর্থযাত্রা করিবে, এবং পরিবারবর্গকে গঙ্গাস্নানে পাঠাইবে শুনিয়া, আমি বড় বিপন্ন হইলাম।”
সীতা। কি? আজ্ঞা করুন।
চন্দ্র। আমি তোমাদের মঙ্গলার্থ কোন যজ্ঞের সঙ্কল্প করিয়াছি। তাহাতে এক সহস্র রৌপ্যের প্রয়োজন। তাই বা আমায় দিবে কে? উদ্যোগই বা করিয়া দেয় কে?
সীতা। টাকা এখনই আনাইয়া দিতেছি। আর উদ্যোগের জন্য কাহাকে চাই?
চন্দ্র। যজ্ঞের যে সকল আয়োজন করিতে হইবে, জীবন ভাণ্ডারী তাহাতে বড় সুপটু। জীবন ভাণ্ডারীকেও আনাইয়া দাও। আমার এই তল্পিদার ভৃত্য রামসেবক বড় গুণবান্ আর বিশ্বাসী। তার হস্তে খাজাঞ্চিকে পত্র পাঠাইয়া দাও, টাকা ও জীবন ভাণ্ডারীকে আনিবে।