8 R সীতারাম তখন ঐকে বাহিরে আনিয়, তাহার বাম হস্তের রেখা সকল, স্বামী নিরীক্ষণ করিলেন। খড়ি পাতিয়া জন্মশক,দিন, বার, তিথি, দণ্ড, পল, সকল নিরূপণ করিলেন। পরে জন্মকুণ্ডলী অঙ্কিত করিয়া, গুহাস্থিত তালপত্রলিখিত প্রাচীন পঞ্জিকা দেখিয়া, দ্বাদশভাবে গ্ৰহগণের যথাযথ সমাবেশ করিলেন। পরে ঐকে বলিলেন, “তোমার লগ্নে স্বক্ষেত্রস্থ পূৰ্ণচন্দ্র এবং সপ্তমে বুধ বৃহস্পতি শুক্র তিনটি শুভগ্রহ আছেন। তুমি সন্ন্যাসিনী কেন মা ? তুমি যে রাজমহিষী।” * শ্ৰী। শুনিয়াছি, আমার স্বামী রাজা হইয়াছেন। আমি তাহ দেখি নাই। স্বামী। তুমি তাহ দেখিবে না বটে। এই সপ্তমস্থ বৃহস্পতি নীচস্থ, এবং শুভগ্রহক্রয় পাপগ্রহের ক্ষেত্রে + পাপদৃষ্ট হইয়া আছেন। তোমার অদৃষ্টে রাজ্যভোগ নাই। - ঐ তা কিছুই বুঝে না, চুপ করিয়া রহিল। আরও একটু দেখিয়া স্বামীকে বলিল, “আর কিছু তুৰ্ভাগ্য দেখিতেছেন ?” স্বামী । চন্দ্র শনির ত্রিংশাংশগত । শ্ৰী। তাহাতে কি হয় ? স্বামী। তুমি তোমার প্রিয়জনের প্রাণহস্ত্রী হইবে। ঐ আর বসিল না—উঠিয়া চলিল। স্বামী তাহাকে ইঙ্গিত করিয়া ফিরাইলেন। বলিলেন, “তিষ্ঠ। তোমার অদৃষ্টে এক পরম পুণ্য আছে। তাহার সময় এখনও উপস্থিত হয় নাই। সময় উপস্থিত হইলে স্বামিসনদর্শনে গমন করিও।” শ্ৰী। কবে সে সময় উপস্থিত হইবে ? স্বামী । এখন তাহ বলিতে পারিতেছি না। অনেক গণনার প্রয়োজন । সে সময়ও নিকট নহে। তুমি কোথা যাইতেছ? ... " স্ত্রী। পুরুষোত্তমদর্শনে যাইব, মনে করিয়াছি। স্বামী। যাও। সময়ান্তরে, আগামী বৎসরে, তুমি আমার নিকট আসিও। সময় নির্দেশ করিয়া বলিব । তখন স্বামী সন্ন্যাসিনীকেও বলিলেন, “তুমিও আসিও।” তখন গঙ্গাধর স্বামী বাক্যালাপ বন্ধ করিয়া ধ্যানস্থ হইলেন। সন্ন্যাসিনীদ্বয় তাহাকে প্রণাম করিয়া গুহা হইতে বহির্গত হইল। জায়াস্থে চণ্ডভয়ে প্রণয়িনী রাজী ভবেন্দ্র ভূপতেঃ। র্ণ মকরে ।
পাতা:সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।