পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৩

হওয়াতে, রাম অশ্রুপূর্ণ লোচনে গদগদ বচনে বলিতে লাগিলেন, আমরা বিবাহ করিয়া আসিলে, কত উৎসবে দিনপাত হইয়াছিল; পিতৃদেবের কতই আমোদ, কতই আহ্লাদ; মাতৃদেবীরা, অভিনব বধূদিগকে পাইয়া, কেমন আহ্লাদসাগরে মগ্ন হইয়াছিলেন; সতত, তাহাদের প্রতি কতই যত্ন, কতই বা মমতাপ্রদর্শন, করিতেন; রাজভবন নিরন্তর আহ্লাদময় ও উৎসবপূর্ণ হইয়াছিল। হায়! সে সকল কি আহ্লাদের, কি উৎসবের, দিনই গিয়াছে! লক্ষণ বলিলেন, আর্য্য, এই মন্থরা। রাম, মন্থরার নামশ্রবণে অন্তঃকরণে বিরক্ত হইয়া, কোনও উত্তর নাদিয়া, অন্য দিকে দৃষ্টিসঞ্চারণ পূর্ব্বক বলিলেন, প্রিয়ে, দেখ দেখ, শৃঙ্গবের নগরে, যে তাপসতরুর তলে, পরম বন্ধু নিষাদপতির সহিত সমাগম হইয়াছিল, উহা কেমন সুন্দর চিত্রিত হইয়াছে!

 সীতা দেখিয়া হর্ষ প্রদর্শন করিয়া বলিলেন, নথি, এ দিকে জটাবন্ধন ও বক্ললধারণ কেমন সুন্দর চিত্রিত হইয়াছে, দেখুন। লক্ষ্মণ আক্ষেপ প্রকাশ করিয়া বলিলেন, “ইক্ষ্বাকুবংশীয়েরা, বৃদ্ধবয়সে, পুত্রহস্তে রাজ্যভার ন্যস্ত করিয়া, অরণ্যে বাস করেন; কিন্তু আর্য্যকে, বাল্যকালেই, কঠোর আরণ্য ব্রত অবলম্বন করিতে হইয়াছিল। অনন্তর, তিনি রামকে বলিলেন, আর্য্য, মহর্ষি ভরদ্বাজ, আমাদিগকে চিত্রকূটে যাইবার পথ দেখাইয়া দিয়া, যাহার কথা বলিয়াছিলেন, এই