পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
সীতার বনবাস

 সীতা, লক্ষ্মণের মুখে এই সকল কথা শুনিয়া, অশ্রুপূর্ণ নয়নে, মনে মনে বলিতে লাগিলেন, হায়! এ অভাগিনীর জন্য, আর্য্যপুত্রকে কতই ক্লেশভোগ করিতে হইয়াছিল। সেই সময়ে, রামেরও নয়নযুগল হইতে বাষ্পবারি বিগলিত হইতে লাগিল। লক্ষ্মণ বলিলেন, আর্য্য, চিত্র দেখিয়া, আপনি এত শোকাভিভূত হইতেছেন কেন? রাম বলিলেন, বৎস, তৎকালে আমার যে বিষম অবস্থা ঘটিয়াছিল, যদি বৈরনির্যাতনসঙ্কল্প অনুক্ষণ অন্তঃকরণে জাগরূক না থাকিত, তাহা হইলে, আমি, কখনই প্রাণধারণ করিতে পারিতাম। চিত্রদর্শনে সেই অবস্থার স্মরণ হওয়াতে, বোধ হইল, যেন আমার হৃদয়ের গ্রন্থি সকল শিথিল হইয়া গেল। তুমি সকলই স্বচক্ষে দেখিয়াছ; এখন অনভিজ্ঞের মত কথা বলিতেছ কেন!

 লক্ষ্মণ শুনিয়া কিঞ্চিৎ কুণ্ঠিত ও লজ্জিত হইলেন; এবং, বিষয়ান্তরের সংঘটন দ্বারা, রামের চিত্তবৃত্তির ভাবান্তরসম্পাদন আবশ্যক বিবেচনা করিয়া বলিলেন, আর্য্য, এ দিকে দণ্ডকারণ্যভূভাগ দৃষ্টিগোচর করুন; এই স্থানে দুর্দ্ধর্ষ কবন্ধ রাক্ষসের বাস ছিল; এ দিকে ঋষ্যমুক পর্ব্বতে মতঙ্গমুনির আশ্রম; এই সেই সিদ্ধ শবরী শ্রমণা; এই এ দিকে পম্পা সরোবর। রাম, পম্পাশব্দ শ্রবণগোচর করিয়া, সীতাকে বলিলেন, প্রিয়ে, পম্পা পরম রমণীয় সবোবর; আমি,