পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
সীতার বনবাস।

দ্বৈধ বা দোষবোধ না করিয়া, অনায়াসে তাঁহারে গৃহে আনিলে। অতঃপর, আমাদের গৃহে স্ত্রীলোকদিগের চরিত্রে দোষ ঘটিলে, তাহাদের শাসন করা সহজ হইবে না; শাসন করতে গেলে, তাহারা, রাজমহিষীর উল্লেখ করিয়া, আমাদিগকে নিরুত্তর করিবে। অথবা, রাজা ধর্মাধর্ম্মের কর্ত্তা; তিনি যে ধর্ম অনুসারে চলিবেন, আমরা প্রজা, আমাদিগকেও, সেই ধর্ম্ম অবলম্বন করিয়া, চলিতে হইবে।” মহারাজ, যাহা শুনিয়াছিলাম, অবিকল নিবেদন করিলাম, আমার অপরাধমার্জ্জনা করিবেন। হা বিধাতঃ! এত দিনের পর, তুমি আমার দুমুখনাম অর্থ করিয়া দিলে! এই বলিয়, বিদায় লইয়া, রোদন করিতে করিতে, দুর্মুখ তথা হইতে প্রস্থান করিল।

 দুর্মুখমুখে সীতাসংক্রান্ত অপবাদবৃত্তান্ত শ্রবণগোচর করিয়া, রাম, হা হতোহস্মি বলিয়া, ছিন্ন তরুর ন্যায়, ভূতলে পতিত হইলেন, এবং গলদশ্রু লোচনে, আকুল বচনে, বিলাপ ও পরিতাপ করিয়া বলিতে লাগিলেন, হায়! কি সর্ব্বনাশের কথা শুনিলাম। ইহা অপেক্ষা, আমার বক্ষঃস্থলে বজ্রাঘাত হওয়া ভাল ছিল। কি জন্য এখনও জীবিত রহিয়াছি। আমি নিতান্ত হতভাগ্য; নতুবা, কি নিমিত্তে, উপস্থিত রাজাধিকার বিসর্জন দিয়া, আমায় বনবাস আশ্রয় করিতে হইয়াছিল? কি নিমিত্তেই দুর্বৃত্ত দশানন, পঞ্চবটীতে প্রবেশ