পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
সীতার বনবাস।

তথায় গুরুজন কে কেমন আছেন, কিছুই বুঝিতে পারিতেছি। যাহা হউক, কোনও প্রকার সর্ব্বনাশ ঘটিয়াছে, তাহার সন্দেহ নাই; নতুবা, এমন আনন্দের সময়, এরূপ চিত্তচাঞ্চল্য ও অসুখসঞ্চার উপস্থিত হইবে কেন? যৎস, কি নিমিত্ত এরূপ হইতেছে ফল; আমার প্রাণ কেমন করিতেছে, আর আমার তপোবনদর্শনে অভিলাষ হইতেছে না; আমার ইচ্ছা হইতেছে, এখনই অযোধ্যায় ফিরিয়া যাই। ভাল, তোমায় জিজ্ঞাসা করি, আর্য্যপুত্র সঙ্গে আসিবেন বলিয়াছিলেন; তাঁহার আসা হইল না কেন? রথে উঠিবার সময়, আহ্লাদে তোমায় সে কথা জিজ্ঞাসিতে ভুলিয়াছিলাম। তাঁহার না আসাতে, আমার মনে নানা সন্দেহ উপস্থিত হইতেছে। বৎস, কি করি বল; আমার চিত্তচাঞ্চল্য ক্রমেই প্রবল হইতেছে। রাবণ হরণ করিয়া লইয়া যাইবার পূর্ব্ব ক্ষণে, ঠিক এইরূপ চিত্তচাঞ্চল্য ঘটিয়াছিল; আবার কি সেইরূপ কোনও উৎপাত উপস্থিত হইবে? না জানি, কি সর্ব্বনাশই ঘটিবে। এক বার মনে হইতেছে, তপোবন দর্শনে না আসিলে ভাল হইত; আর্য্যপুত্রের নিকটে থাকিলে, কখনও এরূপ অসুখ উপস্থিত হইত না। এক এক বার মনে হইতেছে, আর আমি এ জন্মে আর্য্যপুত্রকে দেখিতে পাইব না।

 সীতার এইরূপ চিত্তচাঞ্চল্য দেখিয়া ও কাতরোক্তি