পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৪৫

শুনিয়া, লক্ষ্মণ যৎপরোনাস্তি বিষণ্ণ ও শোকাকুল হইলেন; কিন্তু, অতি কষ্টে ভাবগোপন করিয়া, শুষ্ক মুখে, বিকৃত স্বরে বলিলেন, আর্য্যে, আপনি কাতর হইবেন না; রঘুকুলদেবতারা আমাদের মঙ্গল করিবেন। বোধ হয়,, সকলকে ছাড়িয়া আসিয়াছেন, কেহ নিকটে নাই; এজন্যই, আপনকার এই চিত্তচাঞ্চল্য ঘটিয়াছে। আপনি অস্থির হইবেন; কিয়ৎ ক্ষণ পরেই, উহার নিবৃত্তি হইবে। মধ্যে মধ্যে, সকলেরই চিত্তবৈকল্য ঘটিয়া থাকে। মন স্বভাবতঃ চঞ্চল, সকল সময়ে এক ভাবে থাকে না। আপনি অত উৎকণ্ঠিত হইবেন না।

 সীতা, লক্ষ্মণের মুখশোষ ও স্বরবৈলক্ষণ্য দর্শনে, অধিকতর কাতর হইয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, বৎস, তোমার ভাব দেখিয়া, আমার অন্তঃকরণে বিষম সন্দেহ উপস্থিত হইতেছে। আমি, কখনও, তোমার মুখ এরূপ ম্লান দেখি নাই। যদি কোনও অনিষ্ট ঘটিয়া থাকে, স্পষ্ট করিয়া বল। বলি, আর্য্যপুত্র ভাল আছেন ত? কল্য অপরাহ্লোর পর, আর তাঁহার সঙ্গে দেখা হয় নাই। বোধ হয়, তাঁহাকে দেখিতে পাইলে, এত ক্ষণ এত অসুখ থাকিত না। তখন লক্ষ্মণ বলিলেন, আর্য্যে, আপনি ব্যাকুল হইবে না; আপনার উৎকণ্ঠা ও অসুখ দেখিয়া, আমিও উৎকণ্ঠিত হইয়াছিলাম ও অসুখবোধ করিয়াছিলাম; তাহাতেই আপনি