অষ্টম অধ্যায়। }}} শ্রতিগোচর হইল, এবং ধরিত্রী যেন ঘন ঘন বিকম্পিত হইতে লাগিল। রামের সহধৰ্ম্মিণী ত্রিলোকপূজ্য সীতাদেবী রাক্ষসকর্তৃক অপহৃত হইতেছেন, ধৰ্ম্ম অধৰ্ম্মকর্তৃক আক্রান্ত হইতেছে, পাপ পুণ্যকে দলন করিতেছে । হায়, সংসারে আর ধৰ্ম্ম নাই ; জগৎ হইতে সত্যলোপ হইল, এবং সরলতা ও দয়ার নামও আর কোথাও রহিল না। সীতাদেবী রাবণের হস্ত হইতে পরিত্রাণ লাভের নিমিত্ত, গরুড়কবলিত। ভুজঙ্গীর স্তায়, বারম্বার চেষ্টা করিতে লাগিলেন; কিন্তু দুরন্ত রাক্ষস তাহাকে লইয়া সহসা আকাশপথে উত্থিত হইল। জানকী ইতঃপূৰ্ব্বে র্তাহার একমাত্র রক্ষক দেবর লক্ষ্মণকে অন্যায় কটুক্তি করিয়া রামের নিকট প্রেরণ করিয়াছেন, সেই কারণে র্তাহার দারুণ মনস্তাপ উপস্থিত হইল । তিনি আর কাহাকেও পরিত্রাতা না দেখিয়া নৈরাস্তের প্রগাঢ় তিমিরগর্ভে নিমজ্জিত হইলেন, এবং শোকে বিহ্বল হইয়া বিলাপ ও স্থাবরজঙ্গমকে উন্মত্তার দ্যায় সম্বোধন করিতে লাগিলেন ;– হা গুরুবৎসল লক্ষ্মণ, কামরূপী রাক্ষস আমার লইয়া যায়, তুমি তাহ। জানিতে পারিলে না! হা রাম, ধৰ্ম্মের জন্ত সমস্তই ত্যাগ করিয়াছ,রাক্ষস বলপূর্বক আমায় লইয়া যায়, তুমি দেখিতে পাইলে না ! বীর, তুমি ছত্ত্বিদিগের শিক্ষক, এই দুরাত্মাকে কেন শাসন করিতেছ না ! রে রাক্ষসকুলাধম রাবণ, তুই মৃত্যুমোহে মুগ্ধ হইয়। এই কুকাৰ্য্য করিলি, এক্ষণে রামের হন্তে প্রাণান্তুকর ঘোরতর বিপদ দর্শন কর। হো, ধৰ্ম্মাকাজী রামের ধৰ্ম্মপত্নীকে রাক্ষসে অপহরণ করিয়া লইয়া যায়, কেহ কি তাহাকে রক্ষা করিতে সমর্থ হইল না ? হায়, এতদিনে কৈকেয়ীর মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হইল ; এতদিনে আমরা স্বজনগণের সহিত বিনষ্ট হইলাম। হা জনস্থান, তোমাকে নমস্কার করি ; পুষ্পিত কণিকার সকল, তোমাদিগকে অভিবাদন করি ; রাবণ সীতাকে জপহরণ করিতেছে, তোমরা শীঘ্রই রামকে এই কথা বল। পুণ্যসলিলে
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।