२२७ ।। সীতা । , করিলেন, কদাচই তাহার অন্যথা হইবে না। সীতাহরণের কথা শুনিয়া স্বগ্রীবের সহসা একটা ঘটনা মনে পড়িয়া গেল। একদিন সুগ্ৰীব প্রভৃতি পাচটি বানর পর্বতোপরি উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময়ে এক নিশাচর একটী রমণীকে বলপুৰ্ব্বক গ্রহণ করিয়া আকাশপথে পলায়ন করিতেছিল। সেই নারী হৃদয়বিদারী আৰ্ত্তনাদে গগনমণ্ডল পরিপূর্ণ করিতেছিলেন, এবং সুগ্ৰীব প্রভৃতি বানরগণকে গিরিশৃঙ্গে উপবিষ্ট দেখিয়া তাহাদের মধ্যে একটী উত্তরীয় ও কতকগুলি অলঙ্কার নিক্ষেপ করিয়াছিলেন। সুগ্ৰীব সেই দ্রব্যগুলি সযত্নে রক্ষা করিয়াছেন ; সম্ভবতঃ সেই দুৰ্ব্বত্ত নিশাচরই রাবণ এবং সেই রোরুদ্যমান - রমণীই সীতা হইবেন । এই বলিয়া সুগ্ৰীব একটা গুহা হইতে উত্তরীয় ও অলঙ্কারগুলি আনয়ন করিলেন। রাম তৎসমুদয় দেখিয়াই সীতার বলিয়া চিনিতে পারিলেন ; তাহার নেত্রদ্ধয় অশ্রুজলে আচ্ছন্ন হইয়া গেল ; তিনি সীতাকে স্মরণ করিয়া রোদন এবং সেই অলঙ্কারগুলি বারস্বার হৃদয়ে স্থাপন করিয়া দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যগ করিতে লাগিলেন। লক্ষ্মণ র্তাহার পাশ্বে উপবিষ্ট ছিলেন ; রাম তাহাকে নিরীক্ষণ করিয়া অনর্গল অশ্রুবিসর্জন করিতে করিতে কহিলেন, “লক্ষ্মণ, দেখ, রাক্ষসকর্তৃক অপহৃত হইবার কালে জানকী ভূতলে এই উত্তরীয় ও দেহ হইতে এই অলঙ্কারগুলি ফেলিয়া দিয়াছেন। বোধ হয়, তিনি তৃণাচ্ছন্ন ভূমির উপর এই সমস্ত নিক্ষেপ করিয়া থাকিবেন, নচেৎ এই গুলি কদাচই পূৰ্ব্ববৎ অবিকৃত থাকিত না।” তখন লক্ষ্মণ কহিলেন “আৰ্য্য, আমি কেয়ুর জানি না, কুণ্ডলও জানি না, প্রতিদিন প্রণাম করিতাম এই জন্ত এই দুই নুপুরকেই জানি।” (৪।৬) , রামকে শোকসন্তগু দেখিয়া-মুগ্ৰীব মুমধুর বাক্যে তাছাকে আশ্বস্ত করিলেন, বলিলেন শোকবিহবল হইলে কোন ফলোদয় হইবে না; মনীষিগণের পৌৰুষ আশ্রয় করিয়া কাৰ্যোদ্ধার করাই কৰ্ত্তব্য।
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।