করিয়া মুগ্রীবকে কিষ্কিন্ধ রাজ্য প্রদান না করিলে সুগ্ৰীব সীতাম্বেষণে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম হইবেন না ইহা বিবেচনা করিয়া রঘুবীর রামচন্দ্র সৰ্ব্বাগ্রে তাহাকে রাজ্যপদে প্রতিষ্ঠিত করিতে প্রতিজ্ঞা করিলেন, এবং সেই দিনই তাহাকে বালীর সহিত দ্বন্দ্বযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতে পরামর্শ দিলেন। রামের বাক্যে সুগ্ৰীব অতিশয় প্রীত হইয়া তৎক্ষণাৎ তাহাকে সঙ্গে লইয়া কিষ্কিন্ধায় যাত্রা করিলেন, এবং পুরস্কারে উপস্থিত হইয়া যুদ্ধার্থ বালীকে ঘোররবে আহবান করিতে লাগিলেন। মহাবীর বালী সুগ্ৰীবের সিংহনাদ শ্রবণমাত্র ক্রোধাবিষ্ট হইয়া বহির্গত । হইলেন, এবং আহবানকারী ভ্রাতার সহিত তুমুল যুদ্ধ আরম্ভ করিলেন। ঐ সময় রামচন্দ্র ধনুর্ধারণপূর্বক বৃক্ষের অন্তরালে প্রচ্ছন্ন ছিলেন ; তিনি ভ্রাতৃযুগলকে তুল্যাকার ও অভিন্নরূপ দেখিয় তাহাদের প্রভেদ বুঝিতে সক্ষম হইলেন না এবং মিত্রবধভয়ে শরমোচনও করিলেন না। কিয়ৎক্ষণ যুদ্ধ হইলে সুগ্ৰীব প্রবল বালীর নিকট পরাস্ত হইলেন, এবং রাম তাহাকে রক্ষা করিলেন না বুঝিয়া ঋষ্যমূকাভিমুখে পলায়ন করিতে লাগিলেন। বালীর প্রহারে তাহার দেহ জর্জরিত অবসন্ন ও রক্তাক্ত হইয়াছিল, তিনি অতিকষ্টে এক গছনবনে প্রবেশপূৰ্ব্বক লুক্কায়িত হইলেন ; বালীও মুনির শাপ স্মরণ করিয়া আর অগ্রসর হইলেন না। এদিকে রামচন্দ্র, লক্ষ্মণ ও হনুমানের সহিত, অনতিবিলম্বেই সুগ্ৰীবের নিকট উপস্থিত হইলেন । সুগ্ৰীব লজ্জা ও অপমানে ম্ৰিয়মাণ হইয়া অভিমান ভরে রামের প্রতি মৰ্ম্মভেদী কঠোর বাক্য সকল প্রয়োগ করিতে লাগিলেন। রাম তাহাতে কিছুমাত্র বিচলিত ন হইয় তাহাকে প্রবোধবাক্যে কহিলেন, সখে, ক্রোধ করিও না। আমি যে কারণে শরত্যাগ করি নাই শ্রবণ কর । তোমরা উভয়েই তুল্যরূপ ছিলে, আমি তোমাদের সোসাদৃপ্তে একান্ত মোহিত ও
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।