দশম অধ্যায় । >3む অসার জীবনকেও তুচ্ছ করেন, উৎপীড়নের অসারত প্রদর্শনার্থ ইচ্ছাপূর্বক সহাস্তবদনে প্ৰজলিত হুতাশনকেও আলিঙ্গন করেন, এবং ঘাতকের নিষ্কাসিত খড়গতলে আপনার মস্তক পাতিয়া দিতেও কিছুমাত্র কুষ্ঠিত হন না! ধন, মান, ঐশ্বৰ্য্য এবং জীবনও যদি বিনষ্ট হয় হউক, কিন্তু ধৰ্ম্ম যাহাতে জয়যুক্ত হন, ধৰ্ম্মবীর প্রাণপণে তাহারই চেষ্টা করেন। ধর্মের প্রভাব অক্ষুণ্ণ ও অপ্রতিহত রাখিতে অসমর্থ হইলে, তিনি অকাতরে প্রাণ বিসর্জন করিয়া থাকেন; যেহেতু ধৰ্ম্মই র্তাহার একমাত্র অবলম্বন এবং সেই অবলম্বন একবার বিনষ্ট হইলে আর এই ঘৃণিত জীবনধারণের প্রয়োজন কি ? রাবণের পাশবিক শক্তি ধৰ্ম্মপ্রাণ জানকীর আধ্যাত্মিক শক্তির নিকট সঙ্কুচিত হইয়াছিল, এই নিমিত্ত দুৰ্ব্বত্ত ইচ্ছা করিলেও ভীতিপ্রযুক্ত তাহার উপর বলপ্রয়োগ করিতে সমর্থ হয় নাই। রাবণ যখনই সীতার নিকট উপস্থিত হইয়া ধনরত্নাদির প্রলোভন এবং কখন কখন ভয়প্রদর্শন দ্বারাও তাহাকে ধৰ্ম্মপথ হইতে পরিভ্রষ্ট কৱিতে প্রয়াস পাইত, তখনই সীতাদেবী দস্তসহকারে তাহার ও আপনার মধ্যে একটা তৃণ ব্যবধান রাখিয়া দিতেন। দুরাত্ম রাবণের এরূপ সাহস ছিল না যে, সে সেই তৃণখও উল্লঙ্ঘন করিয়া সীতার একটী কেশও স্পর্শ করিতে সমর্থ হয় ! ধৰ্ম্মই সীতাকে রক্ষা করিতেছিলেন, সুতরাং অধৰ্ম্মের সাধ্য কি যে সে ধৰ্ম্মরক্ষিতা সীতার অভিমুখে একটৗপদও অগ্রসর হইতে সক্ষম হয় ? ইহা ব্যতীত, রাধণ বুঝিতে পারিয়াছিল যে সীতা বড়ই তেজস্বিনী ; তাহার প্রকৃতি সামান্ত নারীর ন্তায় নহে। ধৰ্ম্মকে বিসর্জন করিবার পূৰ্ব্বে সীতা নিশ্চয়ই প্রাণ বিসর্জন করবেন। সীতা মৃত্যুভয়ে ভীত নহেন, বরং ঈদৃশী ছরবস্থায় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করিতেই সৰ্ব্বদা প্রস্তুত। সীতার এইরূপ মনোভাব বিদ্যমান থাকিতে থাকিতে যদি রাবণ তাহার উপর বলপ্রয়োগ করে তাহ হইলে তিনি ১৯
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।