দশম অধ্যায় । ১৬১ প্রকাশ করিলেন ; কিন্তু সীতাদেবী তাহাতে সন্মত হইলেন না। সীতা ভীরুস্বভাবা নারী ; হনুমানের সাগরলঙ্ঘনের সময় হয়ত তিনি উপহার পৃষ্ঠচু্যত হইয়া সাগরগর্ভে নিপতিত হইতে পারেন ; অথবা রাক্ষসগণ হনুমানকে সীতাসহ পলায়ন করিতে দেখিয় তাহার অনুসরণ করিতে পারে। রাক্ষসগণের সহিত হনুমানের যুদ্ধারম্ভ হইলে, সীতার রক্ষণার্থ হনুমানকে অতিশয় ব্যস্ত হইতে হইবে, এবং তদবস্থায় যুদ্ধে জয়লাভ করাও র্তাহার পক্ষে অতিশয় দুষ্কর কার্য্য হইয়া উঠিবে ; অথবা সীতাদেবীই পুনৰ্ব্বার রাক্ষসকবলে পতিত হইতে পারেন ; তাহা হইলে বিষম অনর্থও ঘটিবার সম্ভাবনা । ইহা ব্যতীত হনুমানের পৃষ্ঠে আরোহণ করা সম্বন্ধে সীতার প্রধান আপত্তি এই যে, তিনি কদাচ পরপুরুষ স্পর্শ করেন না। এই নিমিত্তই তিনি বলিলেন “বীর, আমি পতিভক্তির অনুরোধে রাম ব্যতীত অন্ত পুরুষকে স্পর্শ করিতেও ইচ্ছুক নহি । দুরাত্মা রাবণ বলপূৰ্ব্বক আমাকে তাহার অঙ্গস্পর্শ করাইয়াছিল, কিন্তু আমি কি করিব ? তৎকালে আমি নিতান্ত অনাথ ও বিবশ ছিলাম। . এক্ষণে যদি রাম স্বয়ং আসিয়া আমাকে এস্থান হইতে লইয়া যান, তবেই তাহার উচিত কাৰ্য্য করা হইবে।” (৫৩৭) হনুমান সীতার ধৰ্ম্ম ও যুক্তিসঙ্গত বাক্য শ্রবণ করিয়া অতিশয় হৃষ্ট হইলেন এবং এই বাক্য যে মহাত্মা রামের সহধৰ্ম্মিণীরই উপযুক্ত, তাহ নির্দেশ করিয়া সীতার অশেষ প্রশংসা করিতে লাগিলেন। অনন্তর বহুক্ষণ কথোপকথনের পর হনুমান সীতাদেবীকে নানাপ্রকারে আশ্বস্ত করিয়া তাহার নিকটে বিদায় গ্রহণের সঙ্কল্প করিলেন, এবং রামের প্রত্যয়সমুৎপাদনার্থ তাহার নিকট কোন অভিজ্ঞান যাজ্ঞা করিলেন। সীতাদেবী তাহাদের বনবাস সময়ে সংঘটিত কোন বিশেষ ঘটনার উল্লেখ করিয়া পিতৃগৃহে বিবাহকালে জনক প্রদত্ত এক উৎকৃষ্ট চূড়ামণি আপনার মস্তক হইতে ર ૪
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।