५७8 সীতা । এবং ক্ষণকালমধ্যেই ভস্মীভূত হইয়া শ্বশানতুল্য ভীষণ আকার ধারণ করিল । মহাবীর হনুমান এইরূপ মহোৎসাহে লঙ্কা দগ্ধ করিয়া সীতার নিমিত্ত অতিশয় চিন্তিত হইলেন ; কিন্তু তিনি র্তাহাকে অশোককাননে নিরাপদ দেখিয়া হৃষ্ট হইলেন ও র্তাহার নিকট বিদায় গ্রহণ পূৰ্ব্বক অনতিবিলম্বে পুনৰ্ব্বার সাগর লঙ্ঘন করিলেন। অঙ্গদ প্রভৃতি বানরগণ দূর হইতে মহাবীর পবনকুমারের হুঙ্কার শব্দ শ্রবণ পূৰ্ব্বক কাৰ্য্যসিদ্ধি সম্বন্ধে আর সন্দেহ করিলেন না। হনুমান তাহাদের সহিত মিলিত হইবামাত্র প্রধান প্রধান বানরগণ র্তাহার মুখে আনুপূর্বিক সমস্ত বিবরণ শ্রবণ করিয়া উল্লাসে নিমগ্ন হইলেন, এবং হর্ষব্যঞ্জক সিংহনাদ ও কিলকিলাশব্দে দিল্পগুল পরিপূর্ণ করিলেন । বানরগণ আনন্দে বাহক্সানশূন্ত হইয়া নানা প্রকার ক্রীড়াকৌতুকে নিমগ্ন হইল এবং মহারাজ সুগ্ৰীবের সুরক্ষিত এক মধুবনে প্রবেশ পূর্বক তথায় যথেচ্ছ মধুপান করিতে লাগিল । - এদিকে হনুমান ও অঙ্গদ প্রভৃতি বানরগণের প্রত্যাগমনবার্তা শ্রবণ করিয়া সুগ্ৰীব তাহীদের কৃতকাৰ্য্যত সম্বন্ধে সন্দিহান হইলেন না। যথাসময়ে তাহার কাননশোভিত প্রস্রবণশৈলে উপনীত হইলে, মহাবীর পবনকুমার, সোৎকণ্ঠ রামলক্ষ্মণ ও সুগ্ৰীবের সমক্ষে সীতাসংবাদ জ্ঞাপন করিলেন । সাগরলঙ্ঘন অবধি সীতাদর্শন ও লঙ্কাদাহন পৰ্য্যস্ত সমস্ত ব্যাপারই তিনি সবিস্তারে বর্ণনা করিলেন। সীতার দীনদশা, সীতার একান্ত পতিপরায়ণতা, রাবণের সহিত সীতার ব্যবহার, রাবণের উৎপীড়ন, সীতার যন্ত্রণ, সীতার সহিত রাবণের সময়, রামলক্ষ্মণের ঔদাসীন্যে সীতার বিলাপ, প্রাণবিসর্জনে সীতার সঙ্কল্প ইত্যাদি সমস্ত কথাই তিনি রামের নিকট বিবৃত করিলেন।
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৬৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।