দশম অধ্যায় । > ○○ রাম তৎসমুদয় শ্রবণ করিয়া অতিশয় শোকাকুল হইলেন। অনস্তুর হনুমান সীতাপ্রদত্ত অভিজ্ঞানচূড়ামণি রামহস্তে অর্পণ করিবামাত্র, তিনি তৎক্ষণাৎ তাহা চিনিতে পারিয়া অশ্রপূর্ণলোচনে আবেগপূর্ণহৃদয়ে বক্ষঃস্থলে তাহ বারম্বার স্থাপন করিতে লাগিলেন, এবং ঘন ঘন দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়৷ সেই মুহুর্তেই রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্র করিবার সঙ্কল্প করিলেন । অত্যন্ত্রকালমধ্যে যুদ্ধযাত্রার আয়োজন হইল। অগণিত বানরসৈন্য নভোমণ্ডলে ধূলিজাল উডউীন করিয়৷ দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হইতে লাগিল। কিয়দিনমধ্যে রামচন্দ্ৰ সসৈন্তে সাগরোপকূলে উপস্থিত হইলেন এবং সাগর সমুত্তীর্ণ হইবার উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। বানরগণের মধ্যে কেবল মহাবীর হনুমানই সাগরলঙ্ঘনে সক্ষম ; কিন্তু এই অসংখ্য বানর লইয়। রামচন্দ্র কিরূপে লঙ্কায় উপনীত হইবেন সেই চিস্তায় আকুল হইতে লাগিলেন। রামচন্দ্র সুগ্ৰীব প্রভৃতি বীরগণের সাহায্যে স্কন্ধাবার স্থাপন করিয়া বিষঃমনে সেই সমুদ্রতটেই অবস্থান করিতে লাগিলেন। এদিকে লঙ্কাভিমুখে রামের সসৈন্তে আগমনংবাদ প্রাপ্ত হইয়া, দুৰ্ব্বত্ত রাবণ অতিশয় চিন্তাকুল হইল। সে অনতিবিলম্বে সমস্ত জ্ঞাতি বন্ধু ও পারিষদকে সভামণ্ডপে একত্রিত করিয়া তাহাদের সহিত উপস্থিত বিপদে কর্তব্যাকৰ্ত্তব্য নির্ণীত করিতে লাগিল। অনেকেই রাবণের ন্যায় পাপাত্মা ও বীর্য্যমদে গৰ্ব্বিত ছিল, সুতরাং তাছারা লঙ্কেশ্বরকে সুপরামর্শ দিতে অক্ষম হইল। কেবলমাত্র ধৰ্ম্মপরায়ণ বিভীষণই অগ্রজ রাবণের হিতকামনায় কতকগুলি সছুপদেশ প্রদান করিলেন ; কিন্তু দুরাত্মা তাহার বাক্যে অশ্রদ্ধা প্রদর্শন পূৰ্ব্বক তাহাকে যথেষ্ট অবমানিত করিল। বিভীষণের অপরাধ এই যে, তিনি রাবণকে রামহস্তে সীতাসমৰ্পণ করিয়া স্বরাজ্য রক্ষা করিতে অনুরোধ করিয়াছিলেন। যাহা হউক, সীতা
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৬৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।