দ্বাদশ অধ্যায়। ১৮৭ রামচন্দ্রের বনবাসকাল অতিক্রান্ত হইয়াছিল ; সুতরাং তিনি, অনুজ লক্ষ্মণ দেবী জানকী ও মিত্রগণের সহিত, অযোধ্যায় প্রত্যাগত হইতে সমুংসুক হইলেন । রাক্ষসরাজ বিভীষণ অনতিবিলম্বে দেবদুলভ পুষ্পকরথ মুসজ্জিত করাইয়া তৎসমীপে তাহা আনয়ন করিলেন। রামচন্দ্ৰ সৰ্ব্বাগ্রে - বহুসন্মানযোগ্য সীতাদেবী ও লক্ষ্মণের সহিত তাহাতে আরোহণ করিলে, সুগ্ৰীবাদি বানরগণ এবং বিভীষণাদি রাক্ষসগণও তন্মধ্যে স্থান পরিগ্রহ করিলেন। সকলে আরূঢ় হইলে, রামের আজ্ঞামাত্রে সেই সুবৃহৎ পুষ্পকরথ কিঙ্কিনীজাল আলোড়ন পূৰ্ব্বক মহানাদে গগনমার্গে উখিত হইল। রামচন্দ্র প্রিয়তম জানকীর সহিত এক নিভৃত কক্ষে উপবিষ্ট হইয়া চতুর্দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ পূৰ্ব্বক প্রণয়িনীকে ধরণীর বিচিত্র দৃশ্য প্রদর্শন করিতে লাগিলেন। নিয়ে যুদ্ধস্থল; সেই যুদ্ধ স্থলের যে যে অংশে প্রধান প্রধান ঘটনা সকল সংঘটিত হইয়াছিল, রাম অঙ্গুলি নির্দেশ পূৰ্ব্বক সীতাকে তাহ দেখাইতে লাগিলেন। দেখিতে দেখিতে বিমান সমুদ্রের উপরিভাগে উপস্থিত হইল। দিগন্তপ্রসারী মহাসমুদ্র বায়ুবেগে সংক্ষুভিত হইয়া উত্তাল তরঙ্গমালায় সমাচ্ছন্ন হইয়াছিল ; তন্মধ্যে প্রকাও সেতু লম্বমান থাকিয়া, গগনমণ্ডলে ছায়াপথের দ্যায়, পরিশোভিত হইতেছিল। সীতাদেবী বিস্ময়ৰিস্ফারিতলোচনে মহাসাগরের ভীষণ ভাব ও সেই বিচিত্র সেতু দর্শন করিতে লাগিলেন। ক্রমে ক্রমে সাগর অতিক্রান্ত হইলে, অস্পষ্টনীলিমাযুক্ত পূৰ্গমালাশোভিত সুদৃশ্য বেলাভূমি দৃষ্টিগোচর হইল। সীতাদেবী সমুদ্রবক্ষ হইতে তীরভূমির অপূৰ্ব্ব শোভা দেখিয় হৃদয়ে বিমল আনন্দ অনুভব করিলেন। বিমান বেলাভূমি অতিক্রম করিয়া কিষ্কিন্ধাভিমুখে প্রধাবিত হইল। রামচন্দ্র প্রিয়তম জানকীকে কত মুনার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখাইতেছেন, ইত্যবসরে পুষ্পক কিষ্কিন্ধ রাজ্যে উপস্থিত হইল। তারা ও রুমা প্রভৃতি বানর রমণী
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।