ত্রয়োদশ অধ্যায় । रे ०१ জানকীকে কোন দেবকন্ত মনে করিয়া বাল্মীকির নিকট তাeার বৃত্তান্ত গোচর করিল। মহর্ষি ধ্যানস্থ হইয়া মুহূৰ্ত্তমধ্যে সমস্ত ব্যাপার অবগত হইলেন এবং ত্বরিতপদে অনাগিনী সীতার সন্নিধানে উপস্থিত হইলেন । বাল্মীকি সীতাদেবীকে দেখিয়াই সুমধুরবাক্যে কছিলেন “বৎসে, তুমি রাজা দশরথের পুত্রবধূ, রামের প্রিয়মহিষী ও রাজর্ষি জনকের কন্যা ; তুমি ত নিৰ্ব্বিঘ্নে আসিয়াছ ? তুমি যে আসিতেছ, আমি তাহ যোগবলে জানিয়াছি। তোমার আসিবার কারণ ও আমি জানিয়াছি। তুমি যে শুদ্ধস্বভাব। তাহাও আমি জানি। তুমি যে - নিষ্পাপ, আমি তপোবললন্ধ চক্ষুঃপ্রভাবে তাহ জানিয়াছি। এক্ষণে তুমি আশ্বস্ত হও। অতঃপর আমার সন্নিধানে তোমায় অবস্থান করিতে হইবে । আমার এই আশ্রমের অদূরে তাপসীরা তপোনুষ্ঠান করিতেছেন ; তাহার কন্যাস্নেহে নিয়ত তোমায় পালন করিবেন। এক্ষণে তুমি নিশ্চিন্ত হইয়া অৰ্ঘ্য গ্রহণ কর, স্বগৃহের ন্যায় আমার এই আশ্রমে থাক, কিছুমাত্র বিষঃ হইও না।” (৭৪৯) জানকী মহৰ্ষির এই বাক্য শ্রবণ পূৰ্ব্বক তাহাকে ভক্তিভরে প্রণাম করিয়া কহিলেন “তপোধন আমি আপনারই আশ্রয়ে থাকিব।” এই বলিয়া সীতাদেবী তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ গমন করিতে লাগিলেন । বাল্মীকি তাপসীগণের সন্নিকটে উপস্থিত হইয়া জানকীরে তাহাদের হস্তে সমর্পণ করিলেন। পূজ্যস্বভাব তাপসীগণ রাঘবপত্নীর পরিচয় প্রাপ্ত হইয়া অতীব পুলক্লিত হইলেন এবং তাহার মুখ স্বাচ্ছন্যের জষ্ঠ বিশেষ যত্ন করিতে লাগিলেন। দেবী জানকী তাহাদের সৎকারে প্রীত হইয়া তাপসীবেশে সেই আশ্রমেই বাস করিতে লাগিলেন। চন্দ্রশূন্ত হইয়৷ পৃথিবী যেমন অমানিশার অন্ধকারে সমাচ্ছন্ন হয়, পতিবিরহে সীতাদেবীও সেইরূপ শোকাচ্ছন্ন হইয়া দিন যাপন করিতে লাগিলেন।
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/২০৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।