সীতা । 8 אא জগতে চৰ্ম্মচক্ষুর অগোচর কত অদ্ভুত ব্যাপার দেখিলেন । জড়জগতেও যে মহাজ্যোতি ওতপ্রোত হইয়া বিরাজমান রছিয়াছেন, রাম ও সীতার নিৰ্ম্মল জ্যোতিৰ্ম্ময় আত্মা তন্মধ্যে নিমজ্জিত হইল ; তাই সীতা স্বামীর সহিত নিৰ্ভয়ে মহোল্লাসে পৰ্ব্বতপৃষ্ঠে আরোহণ করিতেন। অরণ্যে নির্ভীকচিত্তে পৰ্য্যটন করিতেন, পুষ্পরাশি চয়ন করিতেন, ংসসারসনিনাদিত গোদাবরীতীরে ভ্রমণ করিতেন, কমলশোভিত স্বচ্ছ সরোবরে অবগাহন ও স্বহস্তে কমলরাশি উত্তোলন করিতেন, এবং গিরিনিবার, বন উপবন দর্শন করিয়া বিমল আনন্দলাভ করিতেন। তাই সীতা পুষ্পের সৌন্দর্য্যে বিমুগ্ধ হইতেন, লতিকার সহিত সখীত্ব করিতেন, মৃগশিশুর সহিত ক্রীড়া করিতেন, হরিণীর সহিত ভ্রমণ করিতেন, পক্ষিগণকে আহবান করিতেন এবং আনন্দধ্বনিতে বনস্থল পরিপূর্ণ করিতেন। সীতা যেন মূৰ্ত্তিমতী পবিত্রতা ; সীতা যেন মূৰ্ত্তিমতী কাননশ্ৰী ! তাই সীতাকে দেখিয়া হরিণহরিণীসকল ভয় ত্যাগ করে, হরিণশিশু সীতার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছুটীয়া যায়, ময়ুর সকল ময়ুরীগণে পরিবেষ্টিত হইয়া সীতার করতালিশব্দে কুটরাঙ্গনে নৃত্য করে, কত মনোহর স্বকণ্ঠ পক্ষী আসিয়া প্রাঙ্গণস্থ পুষ্পিত বৃক্ষশাখায় উপবেশন পূৰ্ব্বক অমৃতধারা বর্ষণ করে, এবং রাজহংসশ্রেণী গ্রীবা নত করিয়া অস্ফুটম্বরে বিরাব করিতে করিতে সীতার পশ্চাৎ পশ্চাৎ গমন করে! তাই সীতার দর্শনমাত্রে পুষ্পমুকুল বিকশিত হয়, লতিকা আনন্দে দুলিতে থাকে, বৃক্ষসকল মৰ্ম্মরশব্দে আনন্দোচ্ছাস প্রকাশ করে, শিশুবৃক্ষগুলি করতালি দিয়া নাচিয়া উঠে এবং কাননভূমি আলোকময়ী হয়! সীতাই যেন সকলের জীবন, সীতাই যেন সকলের শোভা, সীতাই যেন প্রকৃতির অস্তর্নিহিত অলৌকিক দীপ্তি সীতা যেন পুষ্পের সৌন্দর্য্যে, পত্রের সোঁকুমাৰ্য্যে, পল্লবের স্নিগ্ধতায়, লতিকার কোমলতায়, হরিণীর শাস্তভাবে, কোকিলের
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/২২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।