পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপসংহার। २२¢ কুজনে, দাতৃহের চীৎকারে, ময়ূরের কে কারবে, হংসের কলকণ্ঠে, কাননের কমনীয়তায়, গিরির গাম্ভীর্য্যে, নিৰ্ব্বরের উল্লাসে ও নদীর কুলুকুলুতানে ওতপ্রোতভাবে বিদ্যমান ! তাই এই অপূৰ্ব্ব শ্ৰী অপহৃত হইলে কানন অন্ধকারময় হইল, এবং রাম উন্মত্তের দ্যায় বৃক্ষ, লতা, পুষ্প, ফল, বন, উপবন, গিরি, নিৰ্বর, মৃগ, পক্ষী, সকলকেই সীতার সমাচার জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। সীতার অভাবে সকলেই নিরানন্দ ও বিষাদে আচ্ছন্ন হইল । রাম জগৎ অন্ধকারময় দেখিলেন ; রামের জীবনালোক যেন সহসা নিৰ্ব্বাপিত হইয় গেল ! পাপরাক্ষস পুণ্যময়ী দেবতাকে অপহরণ করিল। রাবণ অগ্নিকে বস্ত্রে বন্ধনের চেষ্টা করিল ; অমানিশার প্রগাঢ় তিমিরজাল আলোকময়ী প্রভাকে নিৰ্ব্বাপিত করিতে প্রয়াস পাইল ; অধৰ্ম্ম ধৰ্ম্মকে সিংহাসনচ্যুত করিতে যত্ন করিল! কিন্তু পুণ্য পাপকেই দূরীভূত করিল ; আলোকপ্রভা অন্ধকারে আরও উজ্জ্বলীকৃত হইল এবং । ধৰ্ম্ম অধৰ্ম্মকে নিষ্পেষিত করিল। রাবণ ধন, রত্ন, রাজ্য ও ঐশ্বৰ্য্য সমস্তই সীতার চরণতলে সমৰ্পণ করিতে অঙ্গীকার করিল, কিন্তু পতিই র্যাহার ধৰ্ম্ম এবং ধৰ্ম্মই যাহার একমাত্র মুখসাধন, তাহার নিকট ত্ৰিলোকেরও ঐশ্বৰ্য্য অতিশয় ঘুণিত ও তুচ্ছ কথা। শৈশবে ও যৌবনে সীতাচরিত্রে যে স্নিগ্ধজ্যোতি পরিদৃষ্ট হইয়াছিল, রাক্ষসের উৎপীড়নে তাহা প্রাথর্য্যলাভ করিয়া বহুিশিখার দ্যায় প্রদীপ্ত হইয়া উঠিল! সীতা শক্রগুহেও নির্ভীক ও সিংহীর ন্যায় তেজোগৰ্ব্বিত হইয়া কাল যাপন করিতে লাগিলেন। সীতার সেই তেজঃপ্রদীপ্ত মূৰ্ত্তি দর্শন করিয়া পামর রাবণেরও হৃৎকম্প হইয়াছিল। রাবণের সাধ্য ছিল না যে, সে সীতার স্থাপিত একটা তৃণখণ্ড উল্লঙ্ঘন করিয়া তাছার একটা কেশও স্পর্শ করিতে সমর্থ হয়! সীতা সেই অশোককাননে রাক্ষসীপরিবৃত হইয়া তাপসীর দ্যায় কেবল রামেরই অনুধ্যানে নিমগ্ন রছিলেন; দেহে দেহে বিচ্ছিন্ন হইলেও ভৰ্ত্তার সহিত ক্ষণকালের নিমিত্তও তিনি আত্মাতে আত্মাতে বিচ্ছিন্ন হইলেন না। রাক্ষসের সহস্ৰ চেষ্টা বিফল হইল। সাঁতাদেবীও ভীষণ অগ্নিপরীক্ষায় সমুত্তীর্ণ হইলেন। রাক্ষসগৃহেই সীতার প্রকৃত অগ্নিপরীক্ষা হইয়াছিল ; রাবণ নিহত চইলে, রাম লোকাপবাদভয়ে তাহার যে অগ্নিপরীক্ষা করিয়াছিলেন, তাহা ইহার তুলনায় সামান্ত ব্যাপার মাত্র। পাপ ও প্রলোভনের সহিত २२ -