পঞ্চম অধ্যায় । هـه সীতা রামের বাক্য গুনিয়া সজলনয়নে কহিতে লাগিলেন “নাথ, তুমি অরণ্যে যে সকল ছঃখের কথা কহিলে, তাহ সত্য বটে ; কিন্তু তোমার সন্নিহিত থাকিলে সুররাজ ইন্দ্রও আমায় পরাভব করিতে পারিবেন না। আমি তোমার প্রতি স্নেহবশতঃ এবং স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া যখন বনবাসের ইচ্ছা করিতেছি, তখন বনবাসের দুঃখ সকল আমার পক্ষে মুখেরই হইবে। আমি তোমার বিরহে মুহূৰ্ত্তকালও জীবিত থাকিব না ; অতএব তোমার সহিত আমার বনগমন কর। সৰ্ব্বতোভাবে শ্রেয় হইতেছে। নাথ, যে পুরুষ জিতেন্দ্রিয় নহে, স্ত্রী সঙ্গে থাকিলে তাহাকেই অরণ্যবাসের ক্লেশ সহ করিতে হয় ; কিন্তু তুমি নিলোভ, সুতরাং তোমার কোন আশঙ্কাই নাই।” (২২৯) . রাম সীতার বাক্য শ্রবণ করিয়া ঈষৎ হাস্ত করিলেন, কিন্তু তাঙ্কার প্রার্থনায় কিছুতেই সন্মত হইলেন না। তখন সীতাদেবী সহজযুক্তিপথ পরিত্যাগ করিয়া আর এক যুক্তিপথ অবলম্বন করিলেন। তিনি বলিলেন, “পূর্বে পিত্রালয়ে দৈবজ্ঞদিগের মুখে শুনিয়াছি যে আমার অদৃষ্টে নিশ্চয় বনবাস আছে, তদবধি বনবাসবিষয়ে আমারও বিশেষ আগ্রহ আছে। আমি যখন বালিকা ছিলাম, তখন এক সাধুশীল। তাপসী আসিয়া মাতার নিকট আমার এই বনগমনের কথা কহিয়াছিলেন । তিনি তপোবলে যাহা বলিয়াছিলেন ভাহা কি অলীক ? : আর তোমার সহিত বনবাসে আমারও অত্যন্ত অভিলাষ, আমি পূর্বে এমন অনেকদিন অনুনয় করিয়া তোমার নিকট ইছ প্রার্থনা করিয়৷ ছিলাম, তুমিও সন্মত হইয়াছিলে। অতএব নাথ, তুমি এই দুঃখিনীকে । সঙ্গে লইয়া চল ।” ( ২২৯ ) জানকীর সহস্ৰ চেষ্টা বিফল হইল ; রাম সীতাকে সঙ্গে লইতে কোনমতেই স্বীকৃত হইলেন না। নয়নজলে সীতার বক্ষঃস্থল প্লাবিত হইয়া গেল। অনুনয়, বিনয়, যুক্তি, দৈবজ্ঞের উক্তি কিছুই সফল
পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।